বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১

বন্ধ থাকা রংপুর চিনিকলের ক্রয়কেন্দ্রে শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ আখ

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
  ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
বন্ধ থাকা রংপুর চিনিকলের ক্রয়কেন্দ্রে শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ আখ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে বন্ধ হয়ে থাকা রংপুর চিনিকলের ক্রয়কেন্দ্রের ইয়ার্ডে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ আখ। পরিবহণ সমস্যার কারণে চালু রাখা জয়পুরহাট চিনিকলে মাড়াইয়ের জন্য নিয়ে না যাওয়ায় আখের স্তূপ জমে গেছে। অন্যদিকে বিনা নোটিশে চাষিদের কাছ থেকে আখ ক্রয় বন্ধ রাখায় আবার ক্ষেতেও একইভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে কেটে রাখা আখ। এর ফলে আর্থিক ক্ষতি এবং আখ চাষ থেকেও সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন আখ চাষিরা।

উপজেলার মহিমাগঞ্জ এলাকার আখ চাষিদের জমিতে বিপুল পরিমাণ আখ কেটে রাখায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এমন খবরে মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া যায়। গোপালপুর গ্রামের আফজাল, হারুন ও তবিবর এবং পুন্তাইড় গ্রামের ইয়াকুব আলীসহ বেশ কয়েকজন চাষির জমিতে আখ কেটে রাখায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন। আবার একইভাবে মহিমাগঞ্জের রংপুর চিনিকলের কার্ট ইয়ার্ডে স্থাপিত ক্রয়কেন্দ্রে গত কয়েকদিনে কেনা বিপুল পরিমাণ আখ পরিবহণের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে।

মহিমাগঞ্জ আখ ক্রয়কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিআইসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬৯৪ মেট্রিক টন আখ ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল। এর মধ্যে ক্রয় করা হয় ৫০০ মেট্রিক টন আখ। চারদিনে পর্যায়ক্রমে ১৬, ২৭, ১৩ ও ১৩টি গাড়িতে ১০ মেট্রিক টন হিসেবে ৬৯০ মেট্রিক টন আখ জয়পুরহাট চিনিকলে নেওয়ারও লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রম্নটির কারণে মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এ যাবৎ পরিবহণ করা হয়েছে মাত্র ১৭০ মেট্রিক টন আখ। এর ফলে ক্রয় করা আখের সিংহভাগই খোলা মাঠে পড়ে থেকে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে পূর্জি (আখ ক্রয়ের অনুমতিপত্র) সরবরাহের পরও চাষিদের কাছ থেকে আখ না নেয়ায় তাদের জমিতেও পড়ে আছে বিপুল পরিমাণ কাটা আখ। এতে আখ চাষিরাও পড়েছেন চরম বিপাকে। আখ শুকিয়ে ওজন কমে যাওয়ায় তারা গুনতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক বড় লোকসান।

গোপালপুর গ্রামের আখ চাষি আফজাল হোসেন অভিযোগ করেন, জয়পুরহাট চিনিকলের ইক্ষু বিভাগের কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে আমাদের চরম ক্ষতির পাশাপাশি সরকারেরও বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। পান্থামারী গ্রামের আখ চাষি মাসুদ রানা বলেন, মাথাভারি চিনিকল কর্মকর্তাদের কারণে এই এলাকার চাষিরা আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

গাড়িতে আখ বোঝাই কাজের ঠিকাদার মাহতাব উদ্দিন জানালেন, আখ পরিবহণ বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ৩৬ জন শ্রমিককে বসিয়ে রেখেই ২০ হাজার টাকা করে মজুরি গুনতে হচ্ছে তার।

এ ব্যাপারে জয়পুরহাট চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) তারেক ফরহাদ টেলিফোনে বলেন, চালুর পরই যান্ত্রিক ত্রম্নটির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে আমার কিছুই করার নাই।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক আখলাছুর রহমান জানান, যান্ত্রিক ত্রম্নটি সারিয়ে মাড়াই চালু হয়েছে। দ্রম্নতই সব সমস্যা কেটে যাবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে