বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
মনিরামপুর পৌরসভা নির্বাচন

তফসিল ঘোষণা না হলেও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা

জি. এম. ফারুক আলম, মনিরামপুর (যশোর)
  ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

এখনো তফসিল হয়নি যশোরের মনিরামপুর পৌরসভা নির্বাচনের। অথচ মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট এবং দোয়া প্রার্থনা করছেন। বাড়ি-মহলস্নায় এবং চায়ের দোকানে পুরোদমে শুরু হয়েছে নির্বাচনি আমেজ। এমনকি দোয়া প্রার্থনা করে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থী পোস্টার, বিলবোর্ড সেঁটেছেন পৌরশহরসহ পাড়া মহলস্নার রাস্তার মোড়ে মোড়ে। সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীসহ মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের ৪ জনকে এখন মাঠে ময়দানে দেখা যাচ্ছে।

জানা গেছে, দীর্ঘ ২৩ বছরের মনিরামপুর পৌর এলাকায় কে কী উন্নয়ন করেছেন তার হিসাব-নিকাশ কষতে শুরু করেছেন ভোটাররা। মনিরামপুর পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেলেও সে অনুযায়ী উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। কাঙ্ক্ষিত নাগরিক সুবিধা নেই, কেবল ভোটারদের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে করের বোঝা। পৌর এলাকায় নেই কোনো কাঙ্ক্ষিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, যেখানে সেখানে ময়লা আর্বজনার স্তূপ রয়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে রাস্তাঘাটের দুরাবস্থাও কাটেনি এখনো।

পৌরসভাটি ৯৭ সালে স্থাপিত হয়। বর্তমান মেয়াদে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। দীর্ঘ ২৩ বছরের মধ্যে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আমজাদ হোসেন লাভলু, থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ মো. ইকবাল হোসেন এবং বর্তমানে দায়িত্বে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ কাজী মাহমুদুল হাসান।

আসছে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে অংশ নিতে আপাতত মাঠে ময়দানে রীতিমতো চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য চার প্রার্থী। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র অধ্যক্ষ আলহাজ কাজী মাহমুদুল হাসান। তিনি আবারও দলীয় টিকিটেই মেয়র পদে নির্বাচন করবেন বলে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিএনপি দলীয় মনোনয়ন পেতে দলীয় নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা ছাড়াও ভোটারদের সাথে নিত্যদিন মতবিনিময় করে চলেছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট আলহাজ শহীদ মো. ইকবাল হোসেন। তিনি ভোটারদের কাছে দোয়া প্রার্থনায় বেশ জোরেসোরেই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি ৯টি ওয়াডের্র ভোটারদের মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি। তিনি ২০০৪ এবং ২০১০ সালে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন।

সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে বেশি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর প্যানেল মেয়র ১ মো. কামরুজ্জামান কামরুল। সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের বারবার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মরহুম গোলাম মোস্তফার জ্যৈষ্ঠপুত্র এ কামরুজ্জামান মোহন ওয়ার্ড থেকে দুইবার বিপুল ভোটের ব্যবধানে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব করে আসছেন। নিজস্ব অনুদান ছাড়াও সরকারি ও পৌরসভার অর্থায়নে তার ওয়ার্ডে রাস্তা-ঘাট, পানি নিষ্কাশন ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছেন। দলীয় প্রার্থী হতে তিনি দলের মনোনয়ন পেতেও জোর চেষ্টা করে চলেছেন।

আওয়ামী লীগের অপর সম্ভাব্য প্রার্থী ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা ছুটছেন পৌর এলাকার ভোটার দ্বারে দ্বারে। হাকোবা গ্রামের মরহুম গোলাম নবীর ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি ৬ বছর যশোর পলস্নী বিদু্যৎ সমিতি-২ এর পরিচালক পদে নির্বাচিত হন। ৩ বার পলস্নী বিদু্যৎ পরিচালনা বোর্ডের সভাপতিও নির্বাচিত হন তিনি।

সম্ভাব্য এই চার প্রার্থীর বাইরেও আরও কয়েক নেতা মেয়র পদে নির্বাচন করবেন এমন কথা চাউর রয়েছে। এর মধ্যে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য প্রভাষক মো. ফারুক হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আবুল কালাম আজাদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আমজাদ হোসেন, তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বশির আহমেদ খান, বিএনপির মধ্যে থেকে মেয়র পদে নির্বাচন করতে নাম শোনা যাচ্ছে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম শফি ও তরুণ বিএনপি নেতা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে