শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

ভাষা আন্দোলনে মওলানা ভাসানী

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
ভাষা আন্দোলনে মওলানা ভাসানী
অমর একুশে

রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলন দানা বাঁধতে দেরি হলেও শেষ সময়ে এসে তা শুধু ঢাকা শহরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। শেষ পর্যন্ত মফস্বল শহরগুলোয়ও এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেখানেও সংঘবদ্ধ হতে শুরু করেন ভাষাসৈনিকরা। তাদের উৎসাহ জোগাতে এগিয়ে আসেন সর্বস্তরের মানুষ। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী আসাম ছেড়ে তার জন্মভূমি সিরাজগঞ্জ জেলায় গিয়ে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এলাকাবাসীর কাছে। সে সময় সিরাজগঞ্জে মুসলিম লীগ ছাড়া আর কোনো সংগঠন ছিল না। মুসলিম লীগও ছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলার বিরোধী। তাই সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের জন্য একটি নতুন সংগঠন সৃষ্টি করা হয়। সিরাজগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।

প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ। এনায়েতপুরের পীর ওলি হযরত খাজা ইউনুস আলী নকশাবন্দি মোজাদ্দেদী (রহ.) তার সমর্থকদের নিয়ে ভাষা আন্দোলনে সমর্থন দেন। আন্দোলন দানা বেঁধে উঠলে সিরাজগঞ্জের অনেকেই নির্যাতনের শিকার হন।

ভাষাসৈনিক গাজীউল হক লিখেছেন- 'ভাষা আন্দোলনে করণীয় '৫২-এর ৩১ জানুয়ারি ঢাকা বার লাইব্রেরিতে সর্বস্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এক সাধারণ সভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এ সভায় যে ৪০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয় সেখানে ছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী, আবুল হাশিম, আতাউর রহমান খান, কামরুদ্দীন আহমেদ, খয়রাত হোসেন,

আনোয়ারা খাতুন, শামসুল হক, আবুল কাশেম, আবদুল গফুর, মোহাম্মদ তোয়াহা, অলি আহাদ, মীর্জা গোলাম হাফিজ, আবদুল মতিন, কাজী গোলাম মাহবুব, শামসুল হক চৌধুরী, খালেক নেওয়াজ খান, সৈয়দ আবদুর রহিম প্রমুখ উলেস্নখযোগ্য নেতারা। সেই সভাতেই বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা কমিটির পূর্ব ঘোষিত ৪ ফেব্রম্নয়ারির ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র ধর্মঘট এবং ওই দিনের সভা ও শোভাযাত্রার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়।'

ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সংগঠক অলি আহাদ লিখেছেন, '৬ ফেব্রম্নয়ারি পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবির অফিস ১৫০নং মোগলটুলিতে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সরকার যদি ১৪৪ ধারা ইত্যাদি নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাহা হইলে আইন ভঙ্গ করা হইবে কি হইবে না তাহাও আলোচিত হয়। বেশিরভাগ উপস্থিত সদস্যই আইন ভঙ্গের বিপক্ষে মত জ্ঞাপন করেন। কিন্তু আমি ১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে দৃঢ়মত প্রকাশ করি। মওলানা ভাসানী সভাপতির আসন হইতে আমার বক্তব্যের সমর্থনে জোরাল ভাষায় ঘোষণা করিয়া বলেন যে, সরকার আমাদের নিয়মতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বানচাল করিবার জন্য অন্যায়ভাবে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করে। সে সরকার কর্তৃক জারিকৃত নিষেধাজ্ঞাকে মাথা নত করিয়া গ্রহণ করিবার অর্থ স্বৈরাচারের নিকট আত্মসমর্পণ। যা হোক, কোনোরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ব্যতীতই সেই দিনকার সভা মুলতবি করা হয়।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে