জুলাই বিপস্নবোত্তর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় শিক্ষার্থীরা

গবেষণার তথ্য

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
জুলাই বিপস্নবোত্তর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। 'জুলাই-আগস্ট বিপস্নব পরবর্তী সময়ে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা' নিয়ে গবেষণা শীর্ষক বিশেষ এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ২২ ফেব্রম্নয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈজ্ঞানিক এই সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ড. মামুন আহমেদ। বিশেষ অতিথির মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। সেশন চেয়ার হিসেবে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক। গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট সাদিয়া শারমিনসহ দু'জন গবেষক। গবেষণা ফলাফলে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে তিনি জানান, জুলাই বিপস্নবোত্তর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে বাংলাদেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। সেমিনারে বলা হয়, জুলাই-আগস্ট বিপস্নবের ফলে বাংলাদেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা, যারা অন্তত ৫ দিন এই আন্দোলনে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসজুড়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং রাজশাহী বিভাগে গবেষণার কাজ পরিচালিত হয়। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল জুলাই-আগস্ট বিপস্নব পরবর্তী সময়ে বিপেস্নাবত্তর মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য পরিমাপ করা। মানসিক স্বাস্থ্যের অনেক দিক থাকলেও অহীরবঃু, উবঢ়ৎবংংরড়হ ্‌ চড়ংঃ ঞৎধঁসধঃরপ ঝঃৎবংং উরংড়ৎফবৎ (চঞঝউ)-কে সামনে রেখে এই গবেষণার কাজ চালানো হয়। যেখানে ৩৭৫ জন শিক্ষার্থীর যাদের বয়স ১৭ থেকে ২৮ বছর তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে ২৬ জন ডাটা সংগ্রহকারীর প্রায় ৩ মাস সময় লেগেছিল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ জুলাই বিপস্নবের সময় মানুষের আত্মত্যাগ ও সার্বিক পরিস্থিতি কীভাবে মানসিক আঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তা উলেস্নখ করেন। তিনি বলেন, 'জুলাই-আগস্টের ঘটনা প্রচন্ড মানসিক আঘাত ও বিষণ্নতার কারণ হয়েছিল। আন্দোলনে আহত কিংবা প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিরা এখনো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এমনকি যারা বাসায় থেকে সব দেখেছেন, তারাও ওইসব ঘটনা দেখে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।' বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, 'জুলাই গণ-অভু্যত্থানে যথেষ্ট অবদান রাখা সত্ত্বেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যথাযথ স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না- যা তাদের মানসিকভাবে আঘাত করছে। এছাড়া, বিপস্নবে প্রথম সারিতে থাকা মেয়েদের অবদান যথেষ্ট প্রশংসিত হচ্ছে না- যা তাদের মনে হতাশার সৃষ্টি করছে। তিনি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কাউন্সেলিং পরিষেবা প্রকল্পের ওপর গুরুত্ব দেন এবং বাড্ডা, বাসিলা, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন রেড জোনে গবেষণা চালানোর আহ্বান জানান।'