মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

ডিসেম্বর টার্গেট করেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

চাপের কাছে নতিস্বীকার করব না। সময় বলে দেবে আমরা কি করব :ইসি
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ডিসেম্বর টার্গেট করেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
ডিসেম্বর টার্গেট করেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

২০২৫ সালের ডিসেম্বর টার্গেট করেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। ডিসেম্বর সামনে রেখে ভোট করতে গেলে আগামী জুলাই-আগস্ট থেকেই নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি থাকবে কমিশনের।

রোববার নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। সাধারণত ৪৫ থেকে ৫৫ দিন হাতে রেখে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।

ইসি আনোয়ারুল বলেন, ডিসেম্বর টাইমলাইন করেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ডিসেম্বর সামনে রেখেই যেন শিডিউল ঘোষণা করতে পারি, সেই হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছি। রাজনৈতিক দল তাদের মতো করে কথা বলছে। নির্বাচন কমিশন বাস্তবতা মেনে কাজ করছে। ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন করতে গেলে যে যৌক্তিক সময় লাগবে, সেই সময়ে শিডিউল ঘোষণা করব ইনশাআলস্নাহ। নির্বাচন কমিশন কারও সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় নেবে না। কারও নির্দেশনা নয়, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, যৌক্তিক সময়ে তফসিল- কোনো চাপ নেই, কোনো চাপের কাছে নতিস্বীকার করবো না। সময় বলে দেবে আমরা কি করব। ভোট অ্যাজ আরলি অ্যাজ পসিবল, আমরা এগিয়ে যাব। আমরা দ্রম্নততার সঙ্গে কাজ করছি।

স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে ইসি বলেন, স্থানীয় সরকার এবং সংসদ নির্বাচন বিবেচনায় নিচ্ছে। আমাদের কথা হচ্ছে ডিসেম্বর সামনে নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এখন সরকার যদি..... স্থানীয় নির্বাচনের কিছু দিক রয়েছে; যেমন পৌরসভা, সিটি নির্বাচন, জেলা পরিষদ নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। কেউ কেউ বলছে একই সঙ্গে সম্ভব কি না। একই সঙ্গে এসব নির্বাচন করতে গেলে কিছু প্রস্তুতি থাকতে হবে, যা কমিশনের নজরে এখনো আসেনি।

এদিকে, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। কোনো কারণে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে নির্বাচন বড়জোর মাসখানেক পেছানো হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকার এবং প্রধান উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র থেকে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।

এই সূত্রগুলো বলছে, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে কোনো পরিস্থিতিগত কারণে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে ভোট হবে বলে মনে করছেন সরকার-সংশ্লিষ্ট অনেকেই। কারণ, আগামী বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে পবিত্র রমজান শুরু হবে। রমজান ও পবিত্র ঈদুল ফিতর মিলিয়ে দেড়-দুই মাস সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না। এরপর কালবৈশাখী ও বর্ষা মৌসুম শুরু হবে। সাধারণত বর্ষায় জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হয় না। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

ইতিমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চলতি মাসে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ কিছু রাজনৈতিক দল আলাদাভাবে ইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে দলগুলো নির্বাচন প্রশ্নে তাদের অবস্থানও তুলে ধরে। বিএনপি এবং বাম জোট এ বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তারা আগে স্থানীয় নির্বাচন করার বিপক্ষে মত দিয়েছে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য কোনো সময় বেঁধে দেয়নি। তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াত চায় আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন।

এ ছাড়া গণ-অভু্যত্থানের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে। তারা একাধিকবার এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বক্তব্য দিয়েছে এবং সংস্কার করেই নির্বাচনের কথা বলেছে।

ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অল্প সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে, আর আরেকটু বেশি সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।##

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে