মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

অন্তর্বর্তী সরকার লক্ষ্য থেকে বিচু্যত হচ্ছে তারেক রহমান

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
অন্তর্বর্তী সরকার লক্ষ্য থেকে বিচু্যত হচ্ছে তারেক রহমান
তারেক রহমান

অন্তর্বর্তী সরকার তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা বিচু্যত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য-বিবৃতিতে বিভিন্ন রকমের মানুষের মধ্যে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। খুব স্বাভাবিকভাবে রাজনীতিতে যখন বিভ্রান্তি থাকবে তখন সমাজের বিভিন্ন স্তরে অস্থিরতা দেখা দেবে। এই অস্থিরতার কারণে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ সমস্যার সম্মুখিন হবে। কারণ যখনই রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকবে তখন যতই সংস্কারের ঘোষণা করি না কেনো, কোনটাই সফল হবে না।

রোববার ঢাকা বার আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা' শীর্ষক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম (ঢাকা বার ইউনিট)।

সংসদ কার্যকরে বিলম্ব হলে অস্থিরতা বাড়বে উলেস্নখ করে তারেক রহমান বলেন, 'অন্তবর্তীকালীন সরকারসহ প্রত্যেকের মানুষ মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত- আগামীদিনে দেশকে অবশ্যই যত দ্রম্নত সম্ভব একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসা। রাজনৈতিক অস্থিরতা, তর্ক-বিতর্ক এবং আলোচনা বলুন, সেটিকে সংসদের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। সংসদই হচ্ছে সবচেয়ে বড় মূল জায়গা, সেখানে রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত- যাই হোক না কেনো, সেটি সংসদের মধ্যে হয়ে থাকে। সংসদকে কায্‌র্কর করতে দেরি করব এই অস্থিরতা, এই তর্ক-বিতর্ক সবকিছু সংসদের বাইরে চারিদিকে ছড়াতে থাকবে এবং সংসদের বাইরে যত বেশি এটি ছড়াবে তত সব জায়গায় বিভিন্নভাবে অর্থনীতি থেকে শুরু করে, সামাজিক অবস্থা থেকে শুরু করে সকল জায়গায় অস্থিরতা দেখা দেবে যা সামগ্রিকভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে।'

তিনি বলেন, 'দেশের রাজনীতি অস্থির হলে এর প্রতিফলন ঘটবে অর্থনীতিতে। আর অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ করবে সব কিছুতে। এমনকি এটা ক্ষুদ্র মুদি দোকানদার থেকে শুরু করে রিক্সা চালক, মাঝারি ব্যবসায়ি প্রত্যেকেই এই ক্ষতির সম্মুখিন হবেন।'

আইনজীবীদের সমাজের দর্পন হিসেবে আখ্যা দিয়ে তারেক রহমান দেশে স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে আইনজীবীদের ভূমিকা চান তারেক। তিনি বলেন, 'বিএনপির অবস্থান থেকে মনে করি, রাজনৈতিক দল হিসেবে, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মনে করি- দেশে যত দ্রম্নত সম্ভব একটি স্থিতি অবস্থা আনা সম্ভব হবে তত দ্রম্নত দেশকে ধবংসের কিনারা থেকে ধীরে ধীরে বের করে, সরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।'

তারেক রহমান বলেন, অনেকে বলেন থাকেন, কোনো কোনো ব্যক্তি বলে থাকেন নির্বাচন হলে কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ? নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে সে কথাটি এভাবে না বলে আমরা চিন্তা করতে পারি নির্বাচন হলে দেশে একটি স্থিতি অবস্থা আসবে এবং ধীরে ধীরে রিফর্ম কাজগুলো শুরু হবে, সমস্যাগুলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে কমা শুরু করবে। নির্বাচন হলে সমস্যাগুলোর সমাধান কিভাবে করা যায়- এটি দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন বিভিন্ন মানুষ, যখন দায়িত্ব পাবেন স্বাভাবিকভাবে তারা বসবেন, আলোচনা করবেন তারা কাজ করবেন। একদিনে কোনো কিছুই হবে না। কিন্তু সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা শুরু হবে।'

তারেক রহমান বিভিন্ন ব্যক্তি এবং গণমাধ্যমে বিভিন্ন জনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'বিভিন্ন ব্যক্তি সংস্কার প্রস্তাব করছেন। যেটি খুব ভালো বলে আমি মনে করি। কিন্তু যে সময় কেউ সাহস করেনি, ঠিক সেই সময় বিএনপি এবং যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলো মিলে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছে। যারা সংস্কারের কথা বলছেন ওইসব সংস্কারের বাস্তবায়নে সংসদের প্রয়োজন হবে। বিএনপি প্রথম সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, এজন্য এটিকে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা আমাদের একটি পবিত্র দায়িত্ব। এই দায়িত্ব যদি পর্যায়ক্রমে পূরণ করতে হয় তাহলে অবশ্যই একটি সংসদের প্রয়োজন আছে। কারণ সংসদ সেই একমাত্র সংস্কার প্রস্তাবকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হবে।'

তিনি বলেন, 'বিএনপির রাষ্ট্র ক্ষমতায় অভিজ্ঞতা আছে। যদি এখন কতগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করি তাহলে এদেশকে ধ্বংস থেকে রক্ষা সম্ভব নয়।'

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার ইউনিটের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপি মিডিয়া সেলের মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ঢাকা বারের অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে