ঢাকার মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে দু'জনের প্রাণহানি ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় দুটি মামলা করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে 'হত্যা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়া' এবং অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে বলে ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'দুটি মামলাতেই অভিযানকালে আটক পাঁচ জনসহ পলাতক অজ্ঞাত আরও ২০-২২ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর আটক পাঁচজনের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।'
বুধবার গভীর রাতে 'ছিনতাইয়ের প্রস্তুতি' চলার তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানের পাঁচ নম্বর রোডের এক বাড়িতে অভিযানে যায় যৌথবাহিনী। সেসময় বাহিনীর সদস্যরা একটি গলির দুই পাশ ঘেরাও করলে 'সন্ত্রাসীরা' অতর্কিত গুলি করে।
আইএসপিআর জানায়, যৌথ বাহিনী 'আত্মরক্ষার্থে' পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং ৫ সন্ত্রাসীকে অস্ত্রসহ আটক করে। পরে ওই বাড়িতে তলস্নাশি চালিয়ে ছাদের ওপর থেকে জুম্মন ও মিরাজের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, গুলি ও চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে আটক আল আমিন, মিরাজ, মোহাম্মদ হোসেন, মোমিনুল ও মেহেদি হাসানকে পুলিশের দুটি মামলাতেই আসামি করা হয়েছে।
ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার জুয়েল রানা বলেন, 'অভিযানে গেলে হত্যার উদ্দেশ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গুলি করা হয়। এ ঘটনায় যেহেতু দুইজন মারা গেছেন তাই একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আর আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলা হয়েছে। জুম্মন ও মিরাজের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর বৃহস্পতিবারই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একাধিক মামলা ছিল।'
আরও ৯ জন গ্রেপ্তার
এদিকে, অপারেশন ডেভিল হান্টে মোহাম্মদপুর থানা এলাকা থেকে আরও ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। থানা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- কাটুন (২৪), বিলস্নাল (৩২), বিলস্নাল (৪২), আল আমিন (২৪), মেহেদী হাসান (১৯), মো. হোসেন (২৩), মো. মিরাজ (২৬), মমিনুল ইসলাম (২০) ও সাব্বির (১৮)।
শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানান মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান।
সরকার পতনের পর রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা বেড়ে যায়। সম্প্রতি দেশব্যাপী শুরু হওয়া অপারেশন ডেভিল হান্টে মোহাম্মদপুরে অপরাধীদের গ্রেফতারে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
এ কে এম মেহেদী হাসান বলেন, মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ কর্তৃক অপারেশন ডেভিল হান্টে রাতব্যাপী বিভিন্ন পয়েন্টে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে হত্যা, অস্ত্র আইন, দ্রম্নত বিচার আইন, সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও ডাকাতির মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের মধ্যে খুন ও অস্ত্র আইনে ৫ জন, দ্রম্নত বিচার আইনে একজন, জিআর পরোয়ানায় একজন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একজন ও ডাকাতি মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর জোনের এই সহকারী পুলিশ কমিশনার।