ভারতের রাজধানী দিলিস্নতে আজ শুরু হচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ৫৫তম সীমান্ত সম্মেলন। চার দিনের এই সম্মেলন আগামী ২০ ফেব্রম্নয়ারি সমাপ্ত হবে। এবারের সম্মেলনে আলোচ্যসূচিতে ১২টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকছে।
রোববার বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা (মিডিয়া) মো. শরীফুল ইসলাম এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশ নেবেন। প্রতিনিধিদলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, ভূমি জরিপ অধিদপ্তর ও যৌথ নদী কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করবেন।
অন্যদিকে, বিএসএফ মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল অংশ নেবেন এই সম্মেলনে। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিনিধিত্ব করবেন।
তিনি বলেন, 'এবারের সম্মেলনে সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো, সীমান্ত হত্যা, আহত, আটক, অপহরণ ৬
\হরোধ; মূলত আলোচনায় প্রাধান্য পাবে সীমান্ত হত্যা।'
এছাড়া ভারত থেকে বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ দ্রব্যের চোরাচালান প্রতিরোধ, আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন করে অনুপ্রবেশ- বিশেষ করে ভারত সীমান্ত দিয়ে বলপূর্বক বাস্তুচু্যত মিয়ানমার নাগরিকদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধ, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়াসহ অননুমোদিত অবকাঠামো নির্মাণ বন্ধ ও চলমান অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজের নিষ্পত্তি, আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে প্রবাহিত সীমান্তবর্তী চারটি খালের বর্জ্য পানি অপসারণে উপযুক্ত পানি শোধনাগার স্থাপন, জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে রহিমপুর খালের মুখ উন্মুক্তকরণ, আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ক্যাম্পের সম্ভাব্য অবস্থান ও তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য 'সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং পারস্পরিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হবে।'
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে এই সীমান্ত সম্মেলন নিয়ে প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছিলেন- ভারতের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনায় বাংলাদেশের 'টোন'টা (কণ্ঠস্বর) ভিন্ন হবে।
এবার তো বিষয়গুলোর মধ্যে নতুনত্ব কিছু দেখছি না- ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, 'আপনি নতুনত্ব কোনটা চাচ্ছেন। নতুনত্ব হলো ওটা, আগে যেভাবে কথাটা বলতো, এবার কথার টোনটা আলাদা হবে।'
আগামী ২০ ফেব্রম্নয়ারি সীমান্ত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হবে। সম্মেলন শেষে একই দিনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল দেশে ফিরবেন বলে জানান বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা।