সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক শেষে ফটোসেশনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ অন্যরা - স্টার মেইল
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দ্রম্নত রোডম্যাপ দেবেন বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন 'যমুনা' থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কথা জানান।
তিনি বলেন, 'আমরা এই সরকারকে বার বার বলে আসছি যে, তারা অন্তবর্তীকালীন সরকার, দ্রম্নত নির্বাচনের জন্য আমরা তাদের তাগাদা দিয়েছি। নূ্যনতম সংস্কার সম্পন্ন করে আলোচনার ভিত্তিতে দ্রম্নত নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টা এবং বৈঠকে যারা ছিলেন তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, অতিদ্রম্নত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন।'
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমরা আশা করছি এবং জনগণের যেটা প্রত্যাশা আছে, অতিদ্রম্নত নির্বাচন এবং একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন তিনি। যার মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। আমরা যেটা বিশ্বাস করি, গণতান্ত্রিক সরকারের যে ট্রান্সজিশন হবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সেটা অনেক সহজ হয়ে যাবে যদি নির্বাচন হয়।'
রোডম্যাপ করে নাগাদ ঘোষণা হতে পারে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'এটা উনারা ঠিক করবেন তবে সম্ভবত ১৫ তারিখের মধ্যে উনারা কিছু একটা বলতে পারেন। এদিন সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যান। দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, 'স্থানীয় সরকার আগে করার ব্যাপারে আমরা কোনোমতেই একমত নই। আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি যে, জাতীয় নির্বাচনের আগে অন্য কোনো নির্বাচন হবে না।
'সাম্প্রতিক ঘটনাবলির দায় সরকার এড়াতে পারে না'
ফখরুল বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, এর দায় সরকার এড়াতে পারেন না। এজন্য যে, সরকারের বিভিন্ন যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, বিভিন্ন বাহিনী আছে তাদের সামনেই এই ঘটনাগুলো ঘটেছে। যেটা আমরা মনে করি, সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, স্থিতিশীলতা তাকে এই ঘটনা ?যথেষ্টভাবে বিপন্ন করেছে। এছাড়া ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দিয়েছে এসব বিষয়ে কথা বলার।'
তিনি বলেন, 'প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের যেসব দোসর আছেন তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য এবং একই সঙ্গে তাদের প্রশাসন থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা আমরা বলেছি।'
'যারা অর্থনীতির ক্ষতি করেছে, লুট করেছে; তাদের পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য এবং অর্থ লুন্ঠনকারীদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি। একই সঙ্গে বিগত ১৫ বছরে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের কথাও আমরা বলেছি'- বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, 'দ্রব্যমূল্যের ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত জোরালোভাবে বলেছি। বলেছি যে, এই সরকারের অন্যতম ব্যর্থতা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। আমাদের তারা বলেছেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তারা কাজ করেছেন।'
মির্জা ফখরুল বলেন, 'ডেভিল হান্ট অভিযান চলছে; আমরা বলেছি, অতীতেও আমরা অনেক অভিযান দেখেছি, সেই ধরনের ঘটনার যেন কোনো পুনরাবৃত্তি না হয়। অর্থাৎ নিরাপরাধ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এটা নিয়ে যেন কোনো সমস্যা তৈরি করা না হয়।'
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।