পূজা-অর্চনা, নাচ-গান এবং শুভেচ্ছা বিনিময়ে গারো সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব 'ওয়ানগালা' উদযাপিত হলো রাজধানীতে। শুক্রবার ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব হয়েছে লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে। গারোদের বাইরেও বাঙালিসহ আরো অনেক জাতিগোষ্ঠীর মানুষ শামিল হন এই অনুষ্ঠানে।
উৎসবে আসা গারো নারীদের পরনে দেখা গেছে ঐতিহ্যবাহী কমান্দা ও টি-শার্ট। উৎসব প্রাঙ্গণে ছিল ঐতিহ্যবাহী নানা পণ্যের স্টল।
সকালে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা ও পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। পরে শোভাযাত্রা বের করা হয়। থক্কা ও শস্য উৎসর্গের মধ্যদিয়ে শুরু হয় উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এছাড়া ছিল বর্তমান ও সাবেক নকমা-নকমামিচিকদের (ওয়ানগালা উদযাপন কমিটির প্রধান) ওয়ানগালার শুভেচ্ছা বিনিময় পর্ব।
উৎসব সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবারের আয়োজনে জুম চাষ, চিগিং দক্কা দিগিং সিক্কা, ট্রক্কা-মেসাসহ নানা ঐতিহ্যবাহী আয়োজনের পাশাপাশি উৎসব স্মরণিকা ও ক্যালেন্ডারের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
উৎসব প্রাঙ্গণে প্রবেশের পরই দেখা মেলে সাহিত্য পত্রিকা 'থকবিরিম'র সম্পাদক কবি মিঠুন রাকসামের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'গারোদের জাতিসত্তার যে আত্মপরিচয়, তা হলো ওয়ানগালা। এই উৎসবের সঙ্গে আমাদের শেকড়ের সম্পর্ক। এই উৎসব আমাদের আত্মপরিচয়ের পাশাপাশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐক্যেরও ভিত্তি রচনা করে।'
উৎসবে দেখা মেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর। তারা মূলত 'বাংলার গীতরঙ্গ' বিষয়ক পাঠের অংশ হিসেবে উৎসবে আসেন বলে জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক কামালউদ্দিন কবির।
তিনি বলেন, 'আমাদের বিভাগের একটি কোর্স আছে "বাংলার গীতরঙ্গ"। এটি পাঠের অংশ হিসেবে সারা দেশে কী কী গীতরঙ্গ আছে তা অনুসন্ধান করি। এই কোর্স পাঠের অংশ হিসেবেই আমরা এই উৎসবে শিক্ষার্থীদের নিয়ে এসেছি। তারা এই উৎসবে এসে আমাদের বিচিত্র গীতরঙ্গ, বাদ্য, নাট্যের সঙ্গে পরিচিত হবে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিও শ্রদ্ধাশীল হবে। এমনটা আমাদের প্রত্যাশা।'