চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা

গ্রেপ্তার এড়াতে নানা কৌশল নিয়েছিলেন আসামি চন্দন

প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

চট্টগ্রাম বু্যরো ও ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
চন্দন দাস
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামি চন্দন দাসকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানা-পুলিশের একটি দলের কাছে চন্দনকে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ জানায়, আসামি চন্দন ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জে আসছেন, এ তথ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) পেয়েছিল। তিনি ট্রেনে ওঠার পর তথ্যটি জানানো হয় ভৈরব থানা-পুলিশকে। তবে তিনি সরাসরি ট্রেনে ভৈরবে আসেননি। ট্রেন পরিবর্তন করায় তার আসতে দেরি হয়। পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে ভৈরব রেলস্টেশন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। চন্দনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিন মিয়া বলেন, চন্দন আত্মগোপন করতে শ্বশুরবাড়িতে আসছিলেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি নানা কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি সরাসরি ট্রেনে ভৈরব আসেননি; ট্রেন পরিবর্তন করে আসেন। সম্ভাব্য সময়ের চার ঘণ্টা পর চন্দনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। পুলিশ জানায়, চন্দন দাস আইনজীবী আলিফ হত্যা \হমামলার এক নম্বর আসামি। তাকে এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক রুবেল আফরাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিন রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটর সাইকেল ও যানবাহনে ভাঙচুর চালায়। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হন। এ ঘটনায় ২৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৩১ জনের নাম উলেস্নখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় এক নম্বর আসামি চন্দন দাস। আইনজীবীদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা করেন আলিফের ভাই, যেখানে ১১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর বাইরে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। ওই তিন মামলায় মোট ৭৬ জনের নাম উলেস্নখ করে অজ্ঞাত আরও ১৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় সবশেষ গত মঙ্গলবার মোহাম্মদ উলস্নাহ নামের এক ব্যক্তি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ২৯ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন।