স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মিডিয়া বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক মিথ্যা গুজব প্রচার করছে। আর একমাত্র সাংবাদিকরাই সত্য ঘটনা প্রকাশ করে তাদের মিথ্যাকে মিথ্যা প্রমাণ করে দিতে পারে। তিনি সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সত্যটা প্রকাশ করেন, এতে যারা মিথ্যা রটাচ্ছে তাদের মুখে চুনকালি পড়বে।
সোমবার দুপুরে রংপুর পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে বিভাগীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়ার বাবনপুর গ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত বেরোবির শিক্ষার্থী আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন এবং পরিবারের খোঁজ-খবর নেন। সেখানে তিনি শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনা উলেস্নখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আবু সাঈদের বীরত্ব বলে শেষ করা যাবে না। শুনেছি, পীরগঞ্জে তার নামে একটা ফাউন্ডেশন তৈরি করা হচ্ছে। এই ফাউন্ডেশনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যত ধরনের সহযোগিতা দরকার তাই করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তিনজন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। এই মামলা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচার শুরু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অন্য যে আসামিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, 'ইসকন নিষিদ্ধের বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। পরিকল্পনা হলে জানতে পারবেন। কোনো মামলায় হয়রানিমূলকভাবে কাউকে জড়ানো হলে নিরপরাধ ব্যক্তি অবশ্যই ছাড়া পাবেন। আন্দোলন ঘিরে যারা মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনবো। মিথ্যা মামলায় যেন কাউকে শাস্তি ভোগ করতে না হয় এ ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি। এ জন্য পুলিশের পাশাপাশি ডিসিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।'
তিনি দেশবাসীকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'দেশের উন্নতির জন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ যা কিছু রয়েছে সবাই একসঙ্গে কাজ করলে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমি মিডিয়ার কাছে অনুরোধ করবো, আপনারা সত্যি ঘটনা প্রকাশ করেন। যদি আমার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি পান আপনারা সেটা প্রকাশ করুন।'
অতিসম্প্রতি পুলিশে নিয়োগসহ সিলেকশনে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি থাকে সেটা তুলে ধরতে সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'আমি কারও জন্যই রিকুয়েস্ট করছি না। আমরা চাচ্ছি, একটা ফেয়ার সিলেকশন হয়ে যাক। আগে বলা হতো পুলিশে নিয়োগ বাণিজ্য, এবার কিন্তু কোনো ধরনের নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। যদি কোনো রকমের বাণিজ্য হয়ে থাকে আপনারা জানান, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।'
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসফাকুজ্জান,র্ যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।