মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

সরকারি চাকরিজীবীরা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়াতে পারবেন না

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা
যাযাদি ডেস্ক
  ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সরকারি চাকরিজীবীরা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়াতে পারবেন না

রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে কাঠামোগত পরিবর্তনের সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। ক্যাডার, জেলা প্রশাসক- এ ধরনের শব্দগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করবে তারা। সেই সঙ্গে সরকারি চাকরিজীবীরা রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়াবেন না বলেও আশা করে কমিশন।

রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী এসব কথা জানান।

আমলারাই আমলাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে জানিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান বলেন, সরকারি চাকরিজীবীরা যেন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত বা রাজনৈতিক কথা না বলতে পারেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করবে সংস্কার কমিশন। আমলারাই আমলাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। অথচ 'কাক কিন্তু কাকের মাংস খায় না।'

এদিকে, সরকারের কাছে সিভিল সার্ভিসে 'ক্যাডার' শব্দটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বৈঠক শেষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ২

সচিব মো. মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানান। মোখলেস উর রহমান কমিশনের সদস্যসচিব।

?'ক্যাডার' শব্দটি নেতিবাচক হওয়ায় কমিশন এই সুপারিশ করবে বলেও জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমাদের স্পেসিফিক কিছু প্রশ্ন ছিল, সেখানে যেগুলো পেয়েছি আমরা প্রশাসন সম্পর্কে... অনেকেরই আগ্রহ। যেটা বিসিএস, আমরা বলি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস, এটাকে নানান কারণে মনে করা হয় ক্যাডার। ক্যাডার শব্দটার সঙ্গে অনেকের একটা নেগেটিভিটি (নেতিবাচকতা) থাকে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের যে অনেকগুলো সংস্কার প্রস্তাব দেব, এর মধ্যে একটা থাকবে যে, এই ক্যাডার শব্দটি বাদ দিয়ে যার যে সার্ভিস, সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন), সিভিল সার্ভিস (হেলথ), সিভিল সার্ভিস (এগ্রিকালচার)- এভাবে লেখা হবে। এটা একটা বড় সংস্কার আমি মনে করি, এতে অনেকের স্যাটিসফেকশন আসবে।'

সিনিয়র সচিব বলেন, আমরা টু্যর করতে গিয়ে যে জিনিসটা দেখলাম, মানুষ মনের কথা বলতে চেয়েছে। কয়েকটা অফিস সম্পর্কে মানুষের একেবারেই নেগেটিভ ধারণা। এগুলো আপনারা জানেন, আমি জানি, উলেস্নখ করতে চাই না। এরপরও দুই-একটার কথা বলতে হয়। এসিল্যান্ড অফিস সম্পর্কে বাজে ধারণা, রেজিস্ট্রি অফিস সম্পর্কে খুবই বাজে ধারণা।

প্রেস ক্লাবের আয়োজনে সাংবাদিকদের ও এফবিসিসিআইয়ের আয়োজনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় হবে বলেও জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।

মোখলেস উর রহমান বলেন, 'মানুষ পরিবর্তন চায়, সেই পরিবর্তনের জন্যই এই পরিবর্তিত সরকার এসেছে। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করছি।'

ইতোমধ্যে এক লাখ মানুষ অনলাইনে কমিশনের প্রশ্নের জবাব দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

জেলা প্রশাসক নাম পরিবর্তন হবে কিনা- জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, অনেকে বলেছেন, জনপ্রশাসন না বলে জনসেবা বলা যায় কিনা। জেলা প্রশাসক ব্রিটিশ আমলের সৃষ্টি এবং এই শব্দের বাইরে অনেকগুলো প্রতিশব্দ আছে। কালেক্টর আছে, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আছে, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট আছে। আমার মনে হয়, নামের বিকল্প বিষয়ে সাজেশন দেব, সরকার যেটা নেয়। সরকার সেটাই নেবে, যেটা আপনারা চান।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আরও বলেন, 'মানুষের হৃদয় এবং মস্তিষ্ক পরিবর্তন করতে হবে। এই দুই জায়গার সমন্বয়ে যদি পরিবর্তন হয়... আমি যদি নিজেকে বলি, শুনতে আপনার খারাপ লাগবে, আমি একজন চেঞ্জ পারসন। আমার মাথা এবং মন দুই জায়গায় পরিবর্তন আছে। সামনে যা দেখি, সেটার আমি পরিবর্তন চাই। আমার চাকরির ৯২ দিন, সামনে আরও অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন দেখবেন।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে