মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের রায়

তারেক ও বাবরসহ সব আসামি খালাস

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
তারেক ও বাবরসহ সব আসামি খালাস
তারেক ও বাবরসহ সব আসামি খালাস

ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০ বছর আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বহুল আলোচিত মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেয়।

এর আগে জজ আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃতু্যদন্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছিল।

সেই দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল মঞ্জুর করার পাশাপাশি মৃতু্যদন্ড কার্যকরের আবেদন (ডেথ রেফারেন্স) হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে।

যারা আপিল করেছেন, তাদের পাশাপাশি যারা করেননি সবাইকে এ মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ের পর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন খালাস পাওয়া আসামিদের স্বজনরা। তাদের ভাষ্য, এই রায়ের মাধ্যমে তারা 'ন্যায়বিচার' পেয়েছেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, মুফতি আব্দুল হান্নানের জবানবন্দির ভিত্তিতে ২০১১ সালে যে সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে এ মামলার বিচার শুরু হয়েছিল সেই অভিযোগপত্রই ছিল অবৈধ।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ওই ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোড়ন তুলেছিল।

সে সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তখন বিরোধীদলীয় নেতা।

১৪ বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর দন্ডবিধি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা দুই মামলার রায় দেন ঢাকার এক নম্বর দ্রম্নতবিচার ট্রাইবু্যনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।

সেই রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃতু্যদন্ড দেওয়া হয়।

আর খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয়েছে

যাবজ্জীবন কারাদন্ড।

এছাড়া এ মামলার আসামি ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন ঢাকার এক নম্বর দ্রম্নতবিচার ট্রাইবু্যনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।

সেই রায়ের পর্যবেক্ষণে তিনি বলেছিলেন, 'রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায়' ওই হামলা ছিল দলকে 'নেতৃত্বশূন্য করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা'।

তিনি বলেন, 'রাজনীতিতে অবশ্যম্ভাবীভাবে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে শত বিরোধ থাকবে। তাই বলে বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করার প্রয়াস চালানো হবে? এটা কাম্য নয়।'

রোববার হাইকোর্টের রায়ের সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী বিএনপি নেতা কায়সার কামাল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এস এম শাজাহান, জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন ও শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসিম সরকার।

এর আগে হাইকোর্টে গত ২১ নভেম্বর এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শেষ করেন। সেদিন আদালত মামলা দুটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে।

কী ঘটেছিল সেদিন

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রা হওয়ার কথা ছিল। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের মাঝখানে একটি ট্রাক এনে তৈরি করা হয়েছিল মঞ্চ।

শোভাযাত্রার আগে সেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছিলেন তখনকার বিরোধীদলীয় নেতা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বক্তৃতা শেষ করে তিনি 'জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু' বলার সময় ঘটে পর পর দুটি বিস্ফোরণ। এরপর সামান্য বিরতি দিয়ে একের পর এক গ্রেনেড বিস্ফোরণ শুরু হয়। তারই মধ্যে শোনা যায় গুলির আওয়াজ।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা তখনও ভয়াবহতার মাত্রা বুঝে উঠতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এগোতেই তারা দেখতে পান শত শত জুতা, স্যান্ডেল রাস্তায় ছড়ানো। তারই মধ্যে পড়ে রয়েছে মানুষের রক্তাক্ত নিথর দেহ; আহতদের আর্তনাদে ভয়াবহ এক পরিস্থিতি।

হামলায় আহতদের সাহায্য করতে আওয়ামী লীগের অন্য নেতাকর্মীরা যখন ছুটে গেলেন তখন পুলিশ তাদের ওপর টিয়ারশেল ছোড়ে। পুলিশ সে সময় হামলার আলামত সংগ্রহ না করে তা নষ্ট করতে উদ্যোগী হয়েছিল বলে পরে অভিযোগ ওঠে।

সেদিনের হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন ১৬ জন। আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিলস্নুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান ৫৮ ঘণ্টা মৃতু্যর সঙ্গে লড়াই করে ২৪ আগস্ট মারা যান। প্রায় দেড় বছর পর মৃতু্য হয় ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের। পরে সব মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৪ জনে।

২১ আগস্ট হামলায় নিহত অন্যরা হলেন শেখ হাসিনার দেহরক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রহমান, হাসিনা মমতাজ, রিজিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), রতন শিকদার, মোহাম্মদ হানিফ ওরফে মুক্তিযোদ্ধা হানিফ, মোশতাক আহমেদ, লিটন মুনশি, আবদুল কুদ্দুছ পাটোয়ারী, বিলস্নাল হোসেন, আব্বাছ উদ্দিন শিকদার, আতিক সরকার, মামুন মৃধা, নাসিরউদ্দিন, আবুল কাসেম, আবুল কালাম আজাদ, আবদুর রহিম, আমিনুল ইসলাম, জাহেদ আলী, মোতালেব ও সুফিয়া বেগম। একজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

মঞ্চে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিস্ফোরণে মধ্যে মানববর্ম তৈরি করায় সেদিন অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। কিন্তু গ্রেনেডের প্রচন্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়।

মামলার বৃত্তান্ত

হামলার পরদিন মতিঝিল থানার তৎকালীন এসআই শরীফ ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। থানা পুলিশ, ডিবির হাত ঘুরে সিআইডি এই মামলার তদন্তভার পায়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ওই হামলা চালানো হয়। হামলায় অংশ নেয় হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি) জঙ্গিরা। তারা সহযোগিতা নেয় বিদেশি জঙ্গিদের। আর এই ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিল তখনকার চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের 'ইন্ধন'। হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড আনা হয় পাকিস্তান থেকে।

পরে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে নতুন করে তদন্ত শুরু হলে নতুন তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে। জানা যায়, হামলার বিষয়ে নোয়াখালীর জজ মিয়ার 'স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি' দেওয়ার বিষয়টি ছিল নাটক।

ঘটনার চার বছর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৮ সালের ১১ জুন হত্যার অভিযোগ এবং বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি অভিযোগপত্র দেন সিআইডির জ্যেষ্ঠ এএসপি ফজলুল কবির।

জঙ্গি দল হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনকে সেখানে আসামি করা হয়। দ্রম্নতবিচার ট্রাইবু্যনালে ২০০৮ সালের ২৯ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে তাদের বিচারও শুরু হয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটির অধিকতর তদন্তের আবেদন করলে ট্রাইবু্যনাল তা মঞ্জুর করে।

সিআইডির বিশেষ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩ জুলাই আসামির তালিকায় আরও ৩০ জনকে যোগ করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন।

সেখানে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ চারদলীয় জোট সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের নাম আসে।

২০১২ সালের ১৮ মার্চ সম্পূরক অভিযোগপত্রের আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। নতুন করে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।

দন্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনের দুই মামলার বিচারকাজ একই সঙ্গে চলে। রাষ্ট্রপক্ষের ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে মোট ২২৫ জন এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন। জামিনে ও কারাগারে থাকা ৩১ আসামির সবাই আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তাদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেন ২০ জন।

মামলার সাক্ষীদের মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ১৪ জন। আর আসামিদের মধ্যে ১৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর জজ আদালতের রায়ে ৪৯ আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়।

তাদের মধ্যে আটজন রাজনৈতিক নেতা, পাঁচজন সামরিক বাহিনীর সদস্য এবং আটজন পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা। বাকি ৩১ জন হরকাতুল জিহাদের জঙ্গি। দন্ডিত ১৮ আসামি সে সময় পলাতক ছিলেন।

সেই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর রায়সহ মামলা দুটির নথিপত্র ও ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে তা সংশ্লিষ্ট শাখায় ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

আরও কিছু প্রক্রিয়া শেষে ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর এ মামলার ডেথ রেফারেন্স, আসামিদের আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শুরু হয়।

তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে অবস্থান করার কারণে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক। সে কারণে তিনি আপিল করতে পারেননি।

গত ২১ নভেম্বর শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে।

রায়ে খুশি বাবর ও

পিন্টুর স্বজনরা

এদিকে, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় উচ্চ আদালতের দেওয়া রায়ে সন্তোষ জানিয়েছেন খালাস পাওয়া আসামিদের স্বজনরা। তাদের ভাষ্য, এই রায়ের মাধ্যমে তারা 'ন্যায়বিচার' পেয়েছেন।

কুড়ি বছর আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বহুল আলোচিত মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আসামিদের সবাইকে রোববার খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেন।

জজ আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃতু্যদন্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছিল।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান বলেছেন, ন্যায়বিচার পেয়েছেন তারা। তিনি বলেন, 'আলস্নাহর দিকে চেয়েছিলাম ন্যায়বিচারের জন্য। আলস্নাহ ন্যায়বিচার দিয়েছেন, আমাদেরকে দয়া করেছেন। আলস্নাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি।'

বাবরের ছেলে লাবিব ইবনে জামান বলেন, 'আলহামদুলিলস্নাহ। ন্যায়বিচার চেয়েছিলাম, ন্যায়বিচার পেয়েছি। আশা করছি, ইনশা-আলস্নাহ আমার বাবাকে ফিরে পাব।'

মামলার অন্যতম আসামি টাঙ্গাইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম পিন্টু। তিনি এখনো কারাগারে। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পিন্টুর ছোট ভাই বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু তিনবার 'আলহামদুলিলস্নাহ' বলেন। তিনি বলেন, 'আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। এজন্য পারিবারিকভাবে খুশি হয়েছি। আলস্নাহ রাব্বুল আল আমিনের কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আলহামদুলিলস্নাহ, আলহামদুলিলস্নাহ, আলহামদুলিলস্নাহ।'

মামলার আরেক আসামি কুমিলস্নার বিএনপি নেতা শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের ভাই কাজী জুন্নুন বসরী বলেন, ওই মামলার পর তার ভাই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের শারীরিক, মানসিক এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। রায়ের মাধ্যমে এর অবসান হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, 'এই রায় জাতির জন্য একটা আনন্দঘন মুহূর্ত। এই রায়ের মাধ্যমে জাতি কলঙ্কমুক্ত হলো। মামলার পরে আমার ভাই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। আমাদের পরিবারের ওপর ফ্যাসিস্ট সরকার নানাভাবে হয়রানি করেছে। আমার মা তার বড় ছেলের দূরে থাকা, মামলার কারণে চিন্তায় চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি মারা যান। মৃতু্যর আগে তিনি একটা কথাই বলতেন, মরার আগে ভাইকে বাংলাদেশের মাটিতে দেখতে চান। তিনি এই আকুতি নিয়ে চলে গেছেন। রায়ের মাধ্যমে আমাদের পরিবার পুরো বাংলাদেশের কাছে কৃতজ্ঞ। যাদের রক্তের বিনিময়ে দ্বিতীয় স্বাধীনতা, এরপর আমরা মুক্তি পেয়েছি তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞ।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে