সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

বিচারপতি নিয়োগে কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে

যাযাদি ডেস্ক
  ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বিচারপতি নিয়োগে কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে

উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগসংক্রান্ত জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবনা আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি থেকে আইন মন্ত্রণালয় বরাবর এ প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

এর আগে এ বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের ১৫ জন বিচারপতি মতামত দেন। তারপর এ প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে পৃথক সচিবালয় স্থাপনেও মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়।

সোমবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, উচ্চ আদালতে বিচারপতি নিয়োগে জুডিসিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল গঠনের

প্রস্তাবনা রেখে একটি অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শিগগির এ খসড়া আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

পাশাপাশি অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত অরগানোগ্রাম আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের খসড়াও যুক্ত করা হয়েছে সঙ্গে।

গত ২৫ নভেম্বর সুপ্রিমকোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো অগ্রগতি প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতোমধ্যে দেশের উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলো বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসৃত হয়, তা বিশ্লেষণ করে এসংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। এ খসড়া সম্পর্কে সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের মতামত গ্রহণ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ বিচারপতি লিখিতভাবে তাদের মতামত দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতির সার্বিক তত্ত্বাবধানে মতামতসমূহ নিরীক্ষাপূর্বক খসড়া অধ্যাদেশটি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৭ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্ট থেকে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠনসংক্রান্ত প্রস্তাব আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রস্তাবে সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে হাইকোর্ট বিভাগ, অধস্তন আদালত ও ট্রাইবু্যনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ যথাযথরূপে পালনের উদ্দেশে একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় একটি অধ্যাদেশের খসড়া, প্রস্তাবিত সচিবালয়ের অরগানোগ্রাম এবং সম্ভাব্য সংস্কার সম্পর্কে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার আলোকে সুপ্রিমকোর্ট প্রস্তাবিত পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা, ছুটি ইত্যাদি বিষয়ে প্রচলিত দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটবে একই সঙ্গে বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঘোষিত রোডম্যাপে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। নীতিমালার একটি খসড়া প্রস্তুত করে তা সম্পর্কে সারাদেশের অধস্তন আদালতের বিচারকদের মতামত আহ্বান করা হয়েছে। এই খসড়া নীতিমালা সম্পর্কে অধস্তন আদালতের বিচারকদের মতামত গত ৭ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়। ওই সময় পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে ৫২টি মতামত পাওয়া গেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে নীতিমালা চূড়ান্ত করে অচিরেই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

গত ১১ আগস্ট দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। দায়িত্বভার গ্রহণের পর গত ২১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্টের ইনার কোর্ট ইয়ার্ডে অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রোডম্যাপ ঘোষণা করেন তিনি।

রোডম্যাপ অনুযায়ী, বৃগস্পতিবার উচ্চ আদালতের বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত জুডিসিয়াল অ্যাপয়নমেন্ট কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাবনা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালো সুপ্রিম কোর্ট।

প্রসঙ্গত, সংবিধান অনুযায়ী দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শের পর নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত আছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে