বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুলস্নাহকে বহনকারী গাড়িকে 'নিয়ন্ত্রণ হারানো' আরেকটি গাড়ি 'ধাক্কা' দিয়েছে বলে পুলিশের ভাষ্য। তবে এ ঘটনাকে হত্যাচেষ্টা হিসেবে দেখছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
ওয়ারী থানার ওসি ফয়সাল আহমেদ বলেন, 'দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাপ্তানবাজার এলাকায় একটি বাস কাভার্ডভ্যানকে ধাক্কা দিলে কাভার্ডভ্যানটি পেছেন থেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে হাসনাত আব্দুলস্নাহর গাড়িকে ধাক্কা দেয়। এতে হাসনাত আব্দুলস্নাহর প্রাইভেটকারের পেছনের দিকে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।'
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ ফেসবুকে লিখেছেন, 'হাসনাত আব্দুলস্নাহকে আরেকবার যাত্রাবাড়ীতে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টা।'
আর জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম ফেসবুক পোস্টে বলেন, 'চট্টগ্রাম থেকে গতকাল (বুধবার) রাতেই অন্য গাড়িতে করে ঢাকা ব্যাক করলাম। পথে হাসনাতকে কুমিলস্নার বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসলাম। এখন শুনছি সকালে কুমিলস্না থেকে ঢাকায় আসার পথে হাসনাতের গাড়িকে পেছন থেকে আবার অন্য গাড়ি দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে!'
ঘটনাটি 'হত্যাচেষ্টা' ছিল ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, 'এসব ষড়যন্ত্র করে
আর কত? কয়জন হাসনাত মারবেন? মনে নাই সেই অভু্যত্থানের দিনগুলোর কথা? একজনকে যখন বুলেটের আঘাতে লাশ বানিয়েছেন, তখন সেই জায়গায় অন্যজন দাঁড়িয়ে গিয়েছে! কিন্তু পিছু হটেনি। ঠিক একইভাবে এক হাসনাতকে মারলে হাজারো হাসনাত এখন দাঁড়িয়ে যেতে প্রস্তুত। এই নতুন বাংলাদেশের চলার পথকে অবরুদ্ধ করার দুঃসাহস দেখাবেন না। এই তরুণ প্রজন্ম মাথা নোয়াবার নয়। আমরা মরতে শিখে গিয়েছি।'
সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম লিখেছেন, 'যাত্রাবাড়ীতে হাসনাতের গাড়িকে আবারও পেছন থেকে ধাক্কা। জিনিসটা সিরিয়াস পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। সরকারের কাছে প্রটেকশন চাই।'
এর আগে বুধবার চট্টগ্রামে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা থেকে ফেরার পথে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সারজিস-হাসনাতদের বহরের একটি প্রাইভেটকারের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষ হয়।
ট্রাকের ধাক্কায় গাড়িটির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে কেউ হতাহত হননি। ঘটনার পর ট্রাকচালক ও সহকারীকে আটক করা হয়। পরে সমন্বয়করা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন।
এদিকে দুই সমন্বয়কের গাড়িবহরে 'ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে বুধবার রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। রাত ১১টার দিকে দুই সংগঠন আলাদাভাবে মিছিল বের করে। পরে দুই সংগঠনের মিছিল টিএসসিতে এক হয়ে যায়। সেখান থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।