শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২
জামিন নাকচ, কারাগারে সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় দাস

চট্টগ্রামে দফায় দফায় সংঘর্ষ হামলায় আইনজীবী নিহত

ঢাকা-চট্টগ্রামে ১০ পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি জামায়াতের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ আলোচনার অনুরোধ ইসকনের কলকাতায় বিজেপির বিক্ষোভ গ্রেপ্তারে আরআরএজি'র নিন্দা
চট্টগ্রাম বু্যরো
  ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় দাসের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভরতদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী -স্টার মেইল

চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। তবে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'বিক্ষোভকারীরা এক আইনজীবীকে চেম্বারের নিচ থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।' মঙ্গলবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে অন্য একটি সূত্র দাবি করেছে, আদালত থেকে বাসায় ফেরার পথে সড়কে আইনজীবী সাইফুলের ওপর হামলা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃতু্য হয়। সূত্রের দাবি, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ওই আইনজীবীকে 'হত্যা' করা হয়েছে।

নিহত আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম ওরফে আলিফ (৩৫)। তিনি সহকারী সরকারি কৌসুলি (এপিপি)। সাইফুল লোহাগাড়ার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অবস্থায় আরও আটজন চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা হলেন শ্রীবাস দাশ, শারকু দাশ, ছোটন, সুজিত ঘোষ, উৎপল ও এনামুল হক। গুরুতর আহত হওয়া আরেকজনের নাম এখনো জানা যায়নি। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালে আরও ১৯ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল

তসলিম উদ্দিন বলেন, আদালত ভবন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় সাতজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাইফুলকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে, ঢাকায় গ্রেপ্তার চিন্ময় দাশকে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মহানগর আদালত হাজির করা হয়। তাকে কড়া নিরাপত্তায় এদিন আদালতে আনার পর থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন জড়ো হতে থাকেন। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। বিভিন্ন স্স্নোগানে তারা বিক্ষোভ করতে শুরু করেন।

সোয়া ১২টার দিকে চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে পুলিশ-বিজিবি-এপিবিএন সদস্যদের পাহারায় আদালত ভবন থেকে নামিয়ে নিচে রাখা প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। এ সময় প্রিজন ভ্যান ঘিরে সনাতন সম্প্রদায়ের বিক্ষুব্ধ লোকজন বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে সাধারণ লোকজনের পাশাপাশি সাধু সন্তুদেরও দেখা যায়।

এর সাড়ে তিন ঘণ্টা পর আদালত প্রাঙ্গণে সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের এই মুখপাত্রকে কারাগারে নিতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বেলা পৌনে ৩টার দিকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

এরপর আদালত চত্বর থেকে বিক্ষোভকারীরা এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত ভবন থেকে নেমে যাওয়ার সময় সড়কের দুই পাশে রাখা মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে এবং আইনজীবীদের ভবনের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

পরে আদালত থেকে নেমে যাওয়ার সড়কে মুসলিম হাই স্কুলের সামনে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। আইনজীবী, কর্মচারি ও দোকানদাররা বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে।

তারা আদালতের সড়কের বিপরীতে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের হরিজন পাড়ার দিকে ধাওয়া দেয়। থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুটা সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তখন আহত অবস্থায় কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গত সোমবার ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তিনি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন।

বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। চিন্ময় এই মঞ্চেরও মুখপাত্র। ওই সমাবেশের পর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপির নেতা ফিরোজ খান (পরে বহিষ্কৃত)।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দু'টি সংগঠন 'বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের' ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময়কে। গত জুলাই মাসে চিন্ময়কে বহিষ্কার করে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশ।

ঢাকা-চট্টগ্রামে ১০ পস্নাটুন

বিজিবি মোতায়েন

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানী ঢাকায় চার ও চট্টগ্রামে ছয় পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।

তিনি জানান, রাজধানীর শাহবাগ, মৎস্য ভবন ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকায় চার পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগরীতেও ছয় পস্নাটুন বিজিবি সদস্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দায়িত্ব পালন করবেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

এদিকে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার ও জামিন বাতিলের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ জানানো হয়।

এতে বলা হয়, তাকে আটকের পর বাংলাদেশের চরমপন্থি গ্রম্নপগুলো হিন্দু সম্প্রদায় ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপরও হামলা চালিয়েছে। এ ছাড়াও হিন্দু এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাঙচুর এবং মন্দিরে হামলার মতো ঘটনাও ঘটছে বাংলাদেশে।

বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীরা যেখানে ধরা ছোঁয়ার বাইরে সেখানে একজন ধর্মীয় নেতা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন কথা বলেছে তার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বাংলাদেশের হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়।

তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জামায়াতের

এদিকে, চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৬ নভেম্বর দুপুরে চট্টগ্রাম জজ আদালতের এপিপি তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৬ নভেম্বর দুপুরে যে নৃশংস হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে, তা অত্যন্ত জঘন্য এবং নিন্দনীয় অপরাধ। একটি গোষ্ঠী পতিত স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশকে অস্থির করার জন্য ক্রমাগতভাবে দুরভিসন্ধি ও অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা উসকানিমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থির করে তুলতে চায়। দেশপ্রেমিক জনগণ তাদের দুরভিসন্ধির ব্যাপারে পরিপূর্ণ সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ। তাদের অপচেষ্টা অতীতে যেমন ব্যর্থ হয়েছে, আগামীতেও ব্যর্থ হবে ইনশাআলস্নাহ।'

তিনি আরও বলেন, এই নির্মম হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

কলকাতায় বিজেপির বিক্ষোভ

এদিকে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিজেপির বিধায়করা। তাদের সবার হাতে পোস্টারে লেখা ছিল 'চিন্ময় মহাপ্রভুর নিঃশর্ত মুক্তি চাই।'

ওই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, 'চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা। সারা পৃথিবীর সব হিন্দুদের ঐকবদ্ধ হতে হবে। আজ (মঙ্গলবার) কলকাতায় বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখালেন। তবে বাংলাদেশে যদি হিন্দুদের ওপরে অত্যাচার অতি সত্বর বন্ধ না হয় তাহলে আমরা আরও জোরালো বিক্ষোভ শুরু করব।'

আলোচনার অনুরোধ ইসকনের

এদিকে, সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আটকের বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ চেয়ে এবার বিবৃতি দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন)।

সোমবার তাদের অফিশিয়াল এক্স (পূর্বের টুইটার) হ্যান্ডেলে টুইট করে জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইসকনের যুক্ত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং অত্যন্ত আপত্তিজনক।

টুইটে বলা হয়, 'ইসকন ভারত সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছে যেন তারা অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়টি স্পষ্ট করে যে আমরা একটি শান্তিপ্রিয় ভক্তি আন্দোলন।' তারা ইসকন নেতা চৈতন্য কৃষ্ণ দাসকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধও জানায়।

গ্রেপ্তারে আরআরএজি'র নিন্দা

এদিকে, ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করাকে 'ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কণ্ঠরোধ এবং দমন করার চেষ্টা' বলে নিন্দা করেছে রাইটস অ্যান্ড রিস্কস অ্যানালাইসিস গ্রম্নপ (আরআরএজি)।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সোমবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে বিষয়টিকে উলেস্নখ করে আরআরএজি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, 'তাকে বিদেশে যাওয়া থেকে বিরত রাখা হয় ও বিমানবন্দর থেকে থানায় নিয়ে গিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।' যদিও এটি নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বিদেশে না কি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন।

গত ৩০শে অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্তদের তালিকায় তিনিসহ মোট ১৯ জন রয়েছেন।

তাদের বিরুদ্ধে 'অভিযোগ, গত ২৫শে অক্টোবর চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করা হয়' বলে বিজ্ঞপ্তিতে উলেস্নখ করা হয়।

আরআরএজির পরিচালক সুহাস চাকমা বলেন, 'এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাটি করা হয়েছে যাতে হিন্দু সংখ্যালঘুরা সংগঠিত হতে না পারে ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলতে না পারে।'

তিনি আরও বলেন, 'ড. ইউনূস (বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস) এখন বিরোধীদের দমাতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করছেন।'

আরআরএজি ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অবিলম্বে মুক্তির দাবিও জানিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে