বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গণভোট চায় ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাবিতে কফিন মিছিল

যাযাদি রিপোর্ট
  ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদ শক্তি ও তাদের রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধের দাবিতে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে 'ফ্যাসিবাদের কফিন মিছিল' বের করেন ছাত্ররা -যাযাদি

ক্ষমতাচু্যত আওয়ামী লীগকে এ দেশের জনগণ আর দেখতে চায় কি না তা যাচাইয়ে সরকারপ্রধানকে গণভোট আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোলস্না।

তিনি বলেছেন, 'প্রধান উপদেষ্টা যদি মনে করেন আওয়ামী লীগকে এদেশের জনগণ ফেরত চায়, তাহলে তাদের নিয়ে গণভোটের আয়োজন করুন এবং তার সঙ্গে আরেকটি বিষয় যোগ করুন- যারা তাদের চায়, তাদেরকেও আগামী নির্বাচনে সাধারণ মানুষ চায় কি না।'

বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে ফ্যাসিবাদের কফিন মিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি দ্য হিন্দুকে বলেছেন, 'এটা ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি।'

'বিএনপি এটা করেছে, বলেছে- সব রাজনৈতিক দলকে অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। সুতরাং তারা ইতোমধ্যে রায় দিয়ে দিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামতকে উপেক্ষা করব না।'

সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, 'প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার নিয়োগ প্রক্রিয়া জাতির সামনে পরিষ্কার করুন। আপনারা

কাদের ম্যান্ডেট নিয়ে উপদেষ্টা হয়েছেন।

'যদি আন্দোলনে শহীদদের ম্যান্ডেট নিয়ে হয়ে থাকেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করছেন বলে মনে করেন তাহলে জেনে রাখুন, শহীদদের ম্যান্ডেট হচ্ছে- আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।'

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে 'পুরনো জঞ্জাল' বর্ণনা করে বিন ইয়ামিন মোলস্না বলেন, 'এখন জঞ্জাল বিদায় করে দিয়ে যখন রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ এসেছে, তখন আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর জাতীয় পার্টির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলো হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা তাদেরকে নিয়ে নির্বাচন করতে চায়।'

বিভিন্ন দূতাবাস ও রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার কারণে অন্তর্র্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারছে না বলে মনে করেন বিন ইয়ামিন মোলস্না।

তিনি বলেন, 'আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামকে আমরা ব্যর্থ হতে দেব না। আপনারা গণ-অভু্যত্থানের চেতনা ধারণ করে কাজ করুন। আপনাদের ওপর কি কেউ বন্দুক ধরে রেখেছে? আপনারা ভয় পাবেন না, আপনারা নির্ভয়ে কাজ করুন। আমরা আপনাদের ব্যর্থ হতে দেব না।'

জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিহতদের তালিকা এখনো পূর্ণাঙ্গ হয়নি বলে দাবি করে ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বলেন, 'শহীদদের খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হয়নি।

'আহতদের চিকিৎসাসেবা যথাযথভাবে দেওয়া হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আপনারা কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা আমাদের জানান।'

এ সময় তিনি অন্তর্র্বর্তী সরকারের উদ্দেশে পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন, যার মধ্যে আছে- আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ তাদের দোসররা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তাদের ব্যানারে নির্বাচনকারীরা স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচন করতে পারবে না। 'গণহত্যাকারী' কর্মকর্তাদের ডিভিশন বাতিল করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য স্পষ্ট করতে হবে। ফ্যাসিবাদের দোসর ব্যবসায়ীদের উৎপাটন করতে হবে।

সমাবেশ শেষে টিএসসি থেকে বের করা কফিন মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তারা 'ফ্যাসিবাদের পতনে, ভয় করে না মরণে', 'ফ্যাসিবাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না', 'আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না', 'আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ' এমন নানা স্স্নোগান দেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে