উচ্চ দ্রব্যমূল্যের কারণে ক্রেতা হিসেবে নিজেও চাপে আছেন বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। বৃহস্পতিবার খাদ্য ভবনে এক বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছেন, 'আমি নিজেই বাজার করি, চাপে আছি।'
এদিকে যেসব বিষয় অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বর্তী সরকারকে চাপে ফেলছে, নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি এর অন্যতম।
তবে, নতুন ধান ও সবজির সরবরাহ বাড়তে শুরু করলে বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন মি. মজুমদার।
আগামী রোববার থেকে সরকার এবারের আমন ধান-চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।
উপদেষ্টা জানান, ধানের দাম কেজি প্রতি তিন টাকা বাড়িয়ে ৩৩ টাকা নির্ধারণ করা করা হয়েছে। আর, সংগ্রহের জন্য চালের দর ধরা
হয়েছে ৪৭ টাকা।
আমদানির চাল এসেছে মাত্র সাড়ে ৯ হাজার টন
সংবাদ সম্মেলনে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, আমরা ১৩৪ জন ব্যবসায়ীকে চাল আমদানির অনুমতি প্রদান করেছি। এসব এলসির বিপরীতে প্রায় সব চাল দেশেও প্রবেশ করেছে।
এ সময় উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম চড়া। যে কারণে সরকারিভাবে চাল আনতেও মিয়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে নেগোসিয়েশন করতে হচ্ছে। তাদের চালের দাম কমানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চাল আমদানিতে জিরো শুল্কে নিয়ে আসা হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে, উত্তরাঞ্চলে ধানের বাম্বার ফলনের কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। উৎপাদন ভালো হলে আমরা হয়তো কিছুটা ভালো অবস্থানে থাকব। তবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ অবস্থায় কৃষক যাতে ফেয়ার প্রাইস পান, সে জন্য আমরা ধানের সংগ্রহ মূল্য বাড়িয়েছি। আগামী রোববার থেকে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হবে উত্তরাঞ্চলে।
তিনি আরও বলেন, খাদ্য মজুতে আমরা খুব বেশি কমফোর্ট জোনে না থাকলেও মজুত বাড়াতে দ্রম্নত আমন ধান ও চাল কেনা শুরু করছি। একই সঙ্গে আমদানিও দ্রম্নত করা হবে। বর্তমানে সরকারের কাছে ১২ লাখ ৮৮ হাজার টন খাদ্যের মজুত রয়েছে।
বর্তমান সময়ের চালের বাড়তি দাম ভোক্তাকে চাপে রাখলেও সরকারি ব্যবস্থাপনাগুলো এটা কমাতে কাজ করছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, 'আমিও মধ্যবিত্ত, নিজেই বাজার করি। আমিও চাপে আছি।' কারণ, গত বন্যায় অনেকে শীতকালীন সবজি মার খেয়েছে।
সভায় জানানো হয়, গত ২৯ অক্টোবর ট্যারিফ কমিশন বিশ্ববাজারে চালের বাড়তি দামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করে এনবিআরের কাছে। এর বিপরীতে গত ৩১ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।