অন্তর্র্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে যে ছয় কমিশন করেছে; সেই সব কমিশনের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়, এসব কমিশনের মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। আর পুলিশ সংস্কার কমিশন ইতোমধ্যে ১০টি সভা করেছে। অন্যদিকে, নির্বাচন সংস্কার কমিশন প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এদিন বৈঠকের শুরুতে অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, সংস্কারের মাধ্যমে জাতি হিসেবে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চান।
বৈঠকে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী জানান, তার কমিশনের কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সবার মতামত সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
কমিশনের সদস্যরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সফর করে জনসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন জানিয়ে মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, জনপ্রশাসনের বিভিন্ন ক্যাডার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করার বিষয়ে তারা আশাবাদী।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অধ্যাপক ইউনূসকে জানান কমিশন প্রধান সফর রাজ হোসেন।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলছে, বৈঠকে সফর রাজ জানিয়েছেন- পুলিশ সংস্কার কমিশন ইতোমধ্যে ১০টি সভা করেছে। পাশাপাশি অংশীদারদের সঙ্গে চারটি বৈঠক করেছে।
জনসাধারণের মতামত চেয়ে কমিশন একটি প্রশ্নমালা প্রস্তুত করছে যা ইতোমধ্যে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
সফর রাজ বলেছেন, কিছু আইন ও বিধি সংশোধনের প্রস্তাব এসেছে, যেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া কয়েকটি প্রক্রিয়া সহজ করে তোলার জন্য সুপারিশ করা হবে।
মব নিয়ন্ত্রণে বলপ্রয়োগ পদ্ধতি পরিবর্তন করার প্রস্তাব নিয়েও কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান জানিয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর কয়েকটি ধারা পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং তা পরিবর্তন করা হবে কি না তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে আরেক বৈঠকে নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে জানান এ কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
বৈঠকে জানানো হয়- প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অনুপস্থিত ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালট নিয়ে কাজ চলছে।
জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে ভোটার তালিকা সমন্বয় করা হচ্ছে জানিয়ে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতে জোর দিচ্ছে নির্বাচন সংস্কার কমিশন। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ডিজিটাল পস্ন্যাটফর্ম ব্যবহার করে অংশীদারদের পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন প্রধান শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন প্রধান ইফতেখারুজ্জামান এবং সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ নিজেদের কমিশনের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
গত ৩ অক্টোবর নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুদক ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। দুই দিন বাদে ৬ অক্টোবর গঠন করা হয় সংবিধান সংস্কার কমিশন।
কমিশন গঠনের দিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে তাদের সরকারপ্রধানের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।