যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর সম্পর্কে অবহিতকরণ

অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। শনিবার প্রধান উপদেষ্টার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তারা। এ সময় বৈঠকে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান প্রধান উপদেষ্টাকে তার সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফর সম্পর্কে অবহিত করেন। এর আগে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সফর শেষে সন্ধ্যায় দেশে ফেরেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। সফরকালে তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শান্তিরক্ষা মিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাপ্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা এবং কানাডার উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৭ অক্টোবর সেনাবাহিনী প্রধান নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনস বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, ডিপার্টমেন্ট অব অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, জাতিসংঘের মানবাধিকার-সংক্রান্ত হাইকমিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল, আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, ডিপার্টমেন্ট অব পলিটিক্যাল ও পিস বিল্ডিং অ্যাফেয়ার্সের পক্ষে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া এবং প্যাসিফিক-বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল এবং ডিরেক্টর অব অফিস ফর পিস কিপিং স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের প্রত্যেকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন। সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী, বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকলে শান্তিমিশনে 'না' দেশে ফিরেছেন সেনাপ্রধান : এর আগে আইএসপিআর জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সফরশেষে ২৫ অক্টোবর দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সফরকালে তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শান্তিরক্ষা মিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাপ্রধানসহ উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কানাডার উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা এবং ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গত ১৭ অক্টোবর সেনাপ্রধান নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অব পিস অপারেশনস বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ঔবধহ চরবৎৎব খধপৎড়রী, ডিপার্টমেন্ট অব অপারেশনাল সাপোর্ট বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল অঃঁষ কযধৎব, জাতিসংঘের মানবাধিকার-সংক্রান্ত হাইকমিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ওষুব ইৎধহফং কবযৎরং, আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল, ডিপার্টমেন্ট অব পলিটিক্যাল ও পিস বিল্ডিং অ্যাফেয়ার্সের পক্ষে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া এবং প্যাসিফিক-বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল গড়যধসসবফ কযধষবফ কযরধৎর এবং ডিরেক্টর অব অফিস ফর পিস কিপিং স্ট্রাটেজিক পার্টনারশিপ এবহবৎধষ ঔধর গবহড়হ-এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন। সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী, বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এসব বৈঠকে সেনাপ্রধান জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং নীতি নির্ধারণী/ফোর্স কমান্ড পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি, তিনি জঅই ফোর্সেসে প্রেষণে নিয়োজিত থাকাকালীন সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের শান্তিরক্ষা মিশনে নির্বাচিত না করার বিষয় সবাইকে অবহিত করেন। সেনাপ্রধান বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সেনাবাহিনীর চলমান কর্মকান্ডের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকার ও সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে আর্থ-সামাজিক ও শান্তি শৃঙ্খলার উন্নয়নে গৃহীত নানামুখী ইতিবাচক দিক তুলে ধরেন। বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী কন্টিনজেন্ট কর্তৃক স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনার বিষয়ও তাদের অবগত করেন। মিশনে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের মধ্যে শান্তিরক্ষা-বিষয়ক প্রশিক্ষণ বিনিময়, আভিযানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ মিশন-সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়াদি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হয়। সেনাবাহিনী প্রধান জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশ্ব শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের জোরালো ভূমিকা ও সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। এ ছাড়াও, সেনাপ্রধান নিউইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন পরিদর্শন করেন এবং স্থায়ী প্রতিনিধির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। গত ২২ অক্টোবর সেনাপ্রধান ওয়াশিংটন ডিসির পেন্টাগনে যুক্তরাষ্ট্রের চিফ অব স্টাফ অব দ্য আর্মি এবহবৎধষ জধহফু অ. এবড়ৎমব, যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব ডিফেন্স অফিসের ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা-বিষয়ক সহকারী সামরিক সচিব উৎ. ঊষু জধঃহবৎ-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ ছাড়াও, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু'র সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। কানাডা সফরকালে সেনাপ্রধান ভাইস চিফ অব কানাডিয়ান ডিফেন্স স্টাফ খরবঁঃবহধহঃ এবহবৎধষ ঝঃবঢ়যবহ জ কবষংবু এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সহজতর করার জন্য কথা বলেন। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা বিশেষ করে সামরিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রশিক্ষণার্থী বিনিময়ের কথা বলেন। কানাডিয়ান পার্লামেন্টের নাগরিকত্ব ও ইমিগ্রেশন-বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ঝধষসধ তধযরফ এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তারা দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। এ ছাড়াও, বাংলাদেশে মনোনীত কানাডার হাইকমিশনার অলরঃ ঝরহময এবং কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাহিদা সোবহান সেনাপ্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেনাবাহিনী প্রধান গত ১৫ অক্টোবর সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা গিয়েছিলেন।