শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
ঢাকা টেস্ট

ব্যাটিং ব্যর্থতার পর তাইজুলের ঘূর্ণিতে লড়ছে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ঢাকা টেস্টে সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম -ওয়েবসাইট

হেমন্তের শুভ্র সকালে বাংলাদেশের খেলা দেখতে বসে মন খারাপ হতেই পারে ক্রিকেট ভক্তদের। এই মন খারাপের কারণ বাংলাদেশের হতশ্রী ব্যাটিং। সাদমান, শান্ত, লিটন, মিরাজরা দেখালেন কতটা বাজে ব্যাটিং করা যায়। তবে দিনের তৃতীয় সেশনে সেই দুঃখ কিছুটা হলেও ভুলিয়ে দিতে পেরেছেন তাইজুল ইসলাম। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম ফাইফার নিয়ে ঢাকার টেস্টের প্রথম দিনে প্রাণ ফেরালেন অভিজ্ঞ এই স্পিনার।

ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন শেষে স্কোরবোর্ডে ছয় উইকেটে ১৪০ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিন শেষে উইকেটে ছিলেন ১৮ রানে অপরাজিত কাইল ভারানে। তার সঙ্গে ১৭ রানে ব্যাট করছিলেন মুল্ডার।

প্রথম দিনে আলোর স্বল্পতার কারণে খেলা ছয় ওভার কম হয়েছে। ৩৪ রানের লিড নিয়ে মঙ্গলবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই দলের মিলিয়ে ঢাকার টেস্টের প্রথম দিনই পড়ল ১৬ উইকেট। এর মধ্যে বাংলাদেশের পড়েছে ১০টি, দক্ষিণ আফ্রিকার ছয়টি।

সোমবার নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি সফরকারীদের। মাত্র ছয় রান করে সাজঘরে ফেরেন এইডেন মারক্রাম। ২৭ বলে ২৩ রান করে তাকে দেখানো পথে হাঁটেন ক্রিস্টান স্টাবস। এরপর ডেভিডকে সঙ্গে নিয়ে রান তুলতে থাকেন টনি ডে জর্জি। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি ডেভিড। ২৫ বলে ১১ রান করে ক্যাচ আউট হন তিনি।

কিন্তু এক প্রান্ত আগলে রেখে রান তুলতে থাকেন টনি ডে। ২৮তম ওভারে তাইজুলের হাতে বল তুলে দেন শান্ত। এক ওভারে দুই উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। টনি ডে ৭২ বলে ৩০ রান এবং ৪ বলে শূন্য রান করে ম্যাথু ব্রিটজকে আউট হলে ছন্দ হারায় প্রোটিয়ারা। তবে রায়ান রিকেলটনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে লিডে পা রাখে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ৩২তম ওভারে আবারও বোলিংয়ে আসেন

তাইজুল। এবার রায়ান রিকেলটনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়ে নিজের ফাইফার পূরণ করেন এই টাইগার স্পিনার। ৪৯ বলে ২৭ রান করেন রিকেলটন।

শেষ পর্যন্ত কাইলে ভেরাইনের ১৮ রান এবং উইয়ান মুল্ডারের ১৭ রানে ভর করে ৪১ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান তুলে দিন শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

আলোক স্বল্পতার করণে ছয় ওভার হাতে থাকতেই দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করেছেন আম্পায়ার। এখান থেকে দ্বিতীয় দিন শুরু করবে প্রোটিয়ারা।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই ব্যর্থতার আভাস দেন শান্তরা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই চার বল খেলে ০ রান করে আউট হয়ে যান ওপেনার সাদমান ইসলাম। দলীয় ছয় রানে প্রোটিয়া পেসার ওয়ান মুল্ডারের বলে দ্বিতীয় স্স্নিপে এইডেন মার্করামের হাতে ক্যাচ হন তিনি।

এক ওভার পরই ছয় বলে মাত্র চার রান করে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন মুমিনুল হকও। দলের বিপর্যয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত এসে থিতু হতে চাইলেও তিনি হতাশ করেছেন। নিরীহদর্শন বলে কেশব মহারাজের কাছে সহজ ক্যাচ দিনে ব্যক্তিগত সাত রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি মুশফিকুর রহিমও। ২০ বলে ১১ রান করে রাবাদার বলে বোল্ড হন তিনি। ১৩ বলে ১ রান করে তাকে সঙ্গ দেন লিটন দাস। এতে দলীয় ৪৫ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর জয়কে সঙ্গে নিয়ে টাইগার শিবিরে হাল ধরার চেষ্টা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ২৪ বলে ১৩ রান করে আউট হন এই ডানহাতি ব্যাটার। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন ওপেনার জয়। লাঞ্চ বিরতির পিচে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ৯৭ বলে ৩০ রান করে বোল্ড আউট হন জয়ও।

এদিন নিজের অভিষেক রাঙাতে পারেননি জাকের আলী। ১৫ বলে দুই রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর নাঈম হাসানকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন তাইজুল ইসলাম। দুইজনের ব্যাটে ভর করে ১০০ রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত নাঈম হাসান (৮) এবং তাইজুল ইসলাম ১৬ রানে আউট হলে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ৪০.১ ওভারে ১০৬ (জয় ৩০, সাদমান ০, মুমিনুল ৪, শান্ত ৭, মুশফিক ১১, লিটন ১, মিরাজ ১৩, জাকের ২, নাঈম ৮, তাইজুল ১৬, হাসান ৪*; রাবাদা ১১-৪-২৬-৩, মুল্ডার ৮-৪-২২-৩, মহারাজ ১৬.১-৪-৩৪-৩, পিট ৫-১-১৯-১)।

দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস : ৪১ ওভারে ১৪০/৬ (মার্করাম ৬, জোর্জি ৩০, স্টাবস ২৩, বেডিংহ্যাম ১১, রিকেল্টন ২৭, ব্রিটস্কি ০, ভেরেনা ১৮*, মুল্ডার ১৭*; হাসান ৮-১-৩১-১, মিরাজ ১০-০-৩৩-০, তাইজুল ১৫-২-৪৯-৫, নাঈম ৮-০-২০-০)। (প্রথম দিন শেষে)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে