শমসের মবিন আটক আতিকুল কারাগারে
প্রকাশ | ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরীকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানী ডিওএইচএসের বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। এদিকে এর আগের দিন গ্রেপ্তার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার আদালতে তার জামিন শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. আলী হায়দার আতিকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ডিএমপি এবং আদালত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বৃহস্পতিবার ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি-উত্তর) রবিউল হোসেন ভুঁইয়া জানান, বুধবার ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে শমসের মবিন চৌধুরীকে বিদেশে যেতে বাধা দেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তিনি স্ত্রীসহ থাইল্যান্ড যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফেরত আসেন। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে বনানী ডিওএইচএসের বাসা থেকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
অবসরপ্রাপ্ত এই কূটনীতিক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে তিনি ২০১৮ সালে বিকল্প ধারায় যোগ দেন। শুরুতে এই রাজনৈতিক দলে সক্রিয় থাকলেও পরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বে আসেন তিনি।
অন্যদিকে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার তিনটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামের জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন মহানগর হাকিম মো. আলী হায়দার।
বৃহস্পতিবার সকালে আতিকুল ইসলামকে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাকিব হাসান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক হাফিজুর রহমান তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আতিকের পক্ষে আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন এ সময় জামিন আবেদন করেন। আর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করেন। পরে শুনানি শেষে বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুরের আইটি জেড স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রাকিব হাসান সেন্ট জোসেফ স্কুলের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়। শেরে বাংলা নগর নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ৮টায় তার মৃতু্য হয়।
ওই ঘটনায় গত ২২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত রাকিবের চাচা মো. নুরুল আমিন। সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামকেও সেখানে আসামি করা হয়।
এ মামলার বিষয়ে শুনানি শেষে অটোরিকশা চালক রুনি হত্যা মামলায় ও যুবক আল শাহরিয়ার হোসেন হত্যা মামলায় পৃথকভাবে আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. নাজমুল আলম। শুনানি শেষে আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর মধ্যে প্রথম মামলার বিবরণে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুর থানার নুরজাহান রোডের দক্ষিণ মাথায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি চালানো হয়। সেখানে গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশা চালক রনি। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় রনির মা পারভীন গত ৮ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। শেখ হাসিনা, আতিকুল ইসলামসহ ২৭ জনকে সেখানে আসামি করা হয়।
এছাড়া আল শাহরীয়ার হোসেন হত্যা মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় মোহাম্মদপুরের ময়ূর ভিলার সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আন্দোলনে অংশ নেওয়া শাহরীয়ার। ওই ঘটনায় তার বাবা মনির হোসেন গত ৩ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা সহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।