পোশাক শ্রমিকদের জন্য সর্বজনীন পেনশন চালু করা হবে

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গার্মেন্ট সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য পেনশন স্কিম চালু করার স্বপ্ন আছে আমার। এটা করতে সময় লাগলেও আমরা কাজটা শুরু করে দিতে চাই। এটা বাস্তবায়নের জন্য মালিকপক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন হবে। পেনশন স্কিম চালু করার ক্ষেত্রে সফল হতে পারব বলে আশা রাখছি। বুধবার বেলা সোয়া ১১ টায় টঙ্গীর পাগাড় এলাকায় জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিকস লিমিটেড কারখানায় পোশাক শ্রমিকদের সরকারিভাবে ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। আসিফ বলেন, রক্তের বিনিময় নতুন এই স্বাধীনতার প্রথম সুবিধাভোগী হওয়া উচিত এ দেশের মেহনতী মানুষ। বিশেষ করে শ্রমিকরা। গার্মেন্ট সেক্টরের শ্রমিক ও মেহনতী মানুষদের পরিশ্রম আছে বলেই দেশে সীমাহীন লুটপাট, দুর্নীতির পরও টিকে আছে। তিনি বলেন, নতুন যে স্বাধীনতা পেয়েছি ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভু্যথানে সেই আন্দোলনের সঙ্গে শ্রমিকরাও রক্ত দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন সেক্টরের প্রায় শতাধিক শ্রমিক শহীদ হয়েছেন। শ্রমিকদের টিসিবির আওতায় আনা হবে। এ জন্য তাদের প্রতি মাসের বেতন থেকে টিসিবির পণ্যের মূল্য বাবদ নির্ধারিত টাকা কেটে নেওয়া হবে। বুধবার এই কারখানার এক হাজার শ্রমিকের হাতে টিসিবির পণ্য তুলে দেওয়া হয়। পরে কয়েকটি ধাপে কারখানার ১৩ হাজার শ্রমিককে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আমাদের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে। দেশের প্রায় অর্ধেক বন্যাকবলিত হয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে এখনো পুনর্বাসনের কাজ চলমান রয়েছে। প্রায় ১৬ বছর পর গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হওয়ায় গণতান্ত্রিক অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আমরা স্বাগত জানাই। শ্রমিকরাও তাদের দাবিগুলো আমাদের কাছে নিয়ে এসেছে। শ্রম অঞ্চলে অসন্তোষ সৃষ্টির জন্য বহিরাগতরা প্রবেশে করেছে। আমরা শ্রমিক নেতারা ও মালিকপক্ষসহ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বারবার বসেছি। শ্রমিকদের ১৮ দফার দাবির মধ্যে যেগুলো অল্প সময় সমাধান করা যায়, সেগুলোর বাস্তবায়ন চলমান আছে। শ্রমিকদের রেশনিংয়ের যে দাবি ছিল সেটা শ্রম অঞ্চলে টিসিবির মাধ্যমে আমরা স্বল্প মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ কার্যক্রম শুরু করছি। অচিরেই সব শ্রমঘন অঞ্চলে টিসিবির কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে পারব। তিনি গার্মেন্ট মালিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যদি শ্রমিকদের ভালোটা দেখেন, তাহলে আপনাদেরও ব্যবসার উন্নতি হবে এবং সরকারও আপনাদের জন্য বিদেশি বায়ারদের কাছে দেনদরবার করতে পারবে। তারা যখন আমাদের কাছে শ্রমিকদের সমস্যার বিষয় নিয়ে আসে তখন আমরা যদি তাদের আশ্বাস দিতে পারি, তারাও আশ্বস্ত হয় এবং আরও বায়ারদের বাংলাদেশে আসার জন্য আহ্বান জানাতে পারে। এত বড় একটা পরিবর্তনের পরও যথেষ্ট ধৈর্য ধরে গার্মেন্ট সেক্টরকে চলমান রেখে আপানারা টিকে আছেন, সেজন্য ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সচিব ফারজানা শিরিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) চেয়ার্রম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা ইকবাল, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) নাফিসা আরেফিন এবং নোমান গ্রম্নপের চেয়ারম্যান এ এস এম রফিকুল ইসলাম নোমান।