স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

অভু্যত্থানে সক্রিয় ছাত্র-জনতাকে মামলা ও হয়রানি করা যাবে না

প্রকাশ | ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দাবিতে ১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত যে অভু্যত্থান ঘটেছে, সে সংশ্লিষ্ট ঘটনার কোনো মামলায় আন্দোলনে সক্রিয় থাকা ছাত্র-জনতাকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এক নবযাত্রা সূচিত হয়েছে। এ গণ-অভু্যত্থানকে সাফল্যমন্ডিত করতে যেসব ছাত্র-জনতা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনের মাঠে থেকে এর পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ১৫ জুলাই হতে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সংগঠিত অভু্যত্থান সংশ্লিষ্ট ঘটনার জন্য কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়া এক্ষেত্রে অসত্য তথ্য প্রদান করে কোনো সুবিধা অর্জনের বিরুদ্ধেও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছে মন্ত্রণালয়। গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। তখন তা দমনে শেখ হাসিনার সরকার মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ কারণে ওই আন্দোলন রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতার অভু্যত্থান ঘটে। এই অভু্যত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটে। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তার সরকারের অনেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। কেউ কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন। সেই আন্দোলনে সরকারের হিসাব মতে, অনেক শিশু-কিশোরসহ ৭৩৭ জনের মৃতু্য হয়েছে। আহত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ৪০০ জন চোখ হারিয়েছেন। দুই চোখ হারিয়েছেন ২০০ জন। 'জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের' হটলাইন-ওয়েবসাইট চালু এদিকে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের সময় নিহত ও আহতদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে হটলাইন নম্বর এবং ফাউন্ডেশন সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে ওয়েবসাইট চালু করেছে 'জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন'। সোমবার ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, হটলাইন নম্বরটি হলো ১৬০০০; যেটিতে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত যোগাযোগ করা যাবে। তবে সরকারি ছুটির দিনগুলোতে নম্বরটি বন্ধ থাকবে। অপরদিকে ওয়েবসাইট িি.িলংংভনফ.পড়স এর মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম সম্পর্কে সবাই বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন। পাশাপাশি গণ-আন্দোলনের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এ ওয়েবসাইট ব্যবহৃত হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সহায়তা এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে গত ১০ সেপ্টেম্বর এ ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়। অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি এবং আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধকে সম্পাদক করে সাত সদস্যের 'জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন' গঠন করা হয়। রোববার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আহতদের ১২২ জনের হাতে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অনুদান দেওয়া হয়েছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন বলে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এ ফাউন্ডেশন থেকে ১৭৬ জন আহতকে মোট এক কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।