ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, গণ-অভু্যত্থানে হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিশেষ ট্রাইবু্যনালে বিচার করা হবে।
ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোববার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন তিনি। তার সঙ্গে ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
অভু্যত্থানে আহত-নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলার প্রসঙ্গে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, 'এ বিষয়ে একটি লিগ্যাল টিম কাজ করছে। আমরা স্পেশাল ট্রাইবু্যনালে এই বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করব। গণ-অভু্যত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, তারা দেশের বীর সন্তান। আন্দোলনে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা জীবন দিয়েছেন, তাদের সেই আত্মত্যাগকে আমরা স্বীকৃতি দিই। আমরা অনুরোধ করব, শহীদ ও আহতদের যেন আমরা কোনো দল বা ব্যানার দিয়ে ভাগ করে না ফেলি। আমরা যেন তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করি।'
নাহিদ ইসলাম বলেন, শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন
\হথেকে আন্দোলনে আহত-নিহত ব্যক্তিদের আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। বিষয়টি চলমান।
আহত ব্যক্তিদের বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন, উসকানিদাতা ছিলেন এবং গণহত্যার সমর্থন করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। এর বাইরে অন্যায়ভাবে কারও বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হলে সেটি খতিয়ে দেখার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আহত জামাল হোসেন বয়স্কদের মাসিক ভাতা এবং তরুণদের চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য উপদেষ্টার প্রতি অনুরোধ করেন।
আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় মামলা হচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, দ্রম্নতই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা জারি করা হবে, যাতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের হত্যার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যরা যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এ পর্যন্ত ফাউন্ডেশন থেকে আহত ব্যক্তিদের দেওয়া টাকার হিসাব সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। আজ মোট ১২২ জনকে ১ লাখ টাকা করে মোট ১ কোটি ২২ লাখ ৬৪ হাজার ৪০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন ৩০ জনের মধ্যে ২৩ জনকে ১ লাখ টাকা করে চেক দেওয়া হয়েছে। বাকি সাতজনকে বিকাশের মাধ্যমে আজই টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ৩৩ জনকে এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ৫৯ জনকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়েছে।
এ পর্যন্ত জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে ১৭৬ জন আহতকে মোট ১ কোটি ৭১ লাখ ৪২ হাজার ৫০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।