টাকা তোলা নিয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত এলাকায় তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) দুই গ্রম্নপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন বলে একটি গ্রম্নপ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হয়। এর আগে বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকালে কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের সীমান্ত নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার কলিঙ্গা বাজারে টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কালীগঞ্জে বসবাসকারী তৃতীয় লিঙ্গের একটি গ্রম্নপ গত বুধবার বিকালে টাকা তোলার জন্য পার্শ্ববর্তী রূপগঞ্জের কলিঙ্গা বাজারে যায়। এ সময় রূপগঞ্জ উপজেলায় বসবাসকারী তৃতীয় লিঙ্গের একটি গ্রম্নপ কাজলী ও খাইরুনের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় দুই পক্ষের মারামারিতে অন্তত ১২ জন আহত হন। আহত একজন কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসা নিলেও বাকিরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলিঙ্গা বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, কালীগঞ্জের রাত্রী হিজড়া গ্রম্নপ ও রূপগঞ্জের কাজলী হিজড়া গ্রম্নপের মধ্যে বাজারের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়।
ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, এদের যন্ত্রণায় আমরা খুবই বিরক্ত। লোকলজ্জার ভয়ে কিছু বলতেও পারি না। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন যদি একটু নজর দেয় তাহলে হয়তো আমরা ব্যবসায়ীরা একটু ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারব।
আহত সন্ধ্যা নামে একজন হিজড়া বলেন, আমরা কালীগঞ্জে বসবাসকারী হিজড়ারা শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম পাশের এলাকায় টাকা-পয়সা উঠিয়ে চলি। এমতাবস্থায় শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাশের এলাকার হিজড়া কাজলী ও খাইরুনের নেতৃত্বে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলায় কালীগঞ্জের রাত্রী, খুকিসহ ১০ জন হিজড়া আহত হয়েছে। তবে ওই পক্ষের কাজলী ও খাইরু নামে দুইজন হিজড়া আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে থানায় কোনো অভিযোগ করেছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে সন্ধ্যা জানান, থানায় কোনো অভিযোগ করব না। দুই পক্ষই হিজড়া, তাই বসে আলোচনা করে মীমাংসা করে ফেলব।
রূপগঞ্জ হিজড়া গ্রম্নপের কাজলী ও খায়রুন তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি, তাই তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জাবেদ কায়সার বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তৃতীয় লিঙ্গের সন্ধ্যা নামে একজন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে গেছে।
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আবাসিক চিকিৎসক নাজমুল ইসলাম বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের কেউই আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেননি।