ঢাকার রামপুরা মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় ঘরে ঢুকে এক যুবককে মারধর করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ডেভেলপার কোম্পানির লোকজনের বিরুদ্ধে। তানজিল জাহান ইসলাম তামিম দীপ্ত টেলিভিশনের সম্প্রচার কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মহানগর প্রজেক্টের চার নম্বর রোডের ডি-বস্নকের একটি বাড়ির আটতলার ফ্ল্যাটে তিনি থাকতেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই বাড়ি থেকে তামিমকে উদ্ধার করে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই ঘটনায় আবাসন নির্মাতা কোম্পানির এক প্রকৌশলীসহ চারজনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন ডিএমপির মোহাম্মদ তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার রুহুল কবীর খান।
তাৎক্ষণিকভাবে আটকদের বিস্তারিত নাম-পরিচয় না জানালেও এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, 'পেস্নজেন্ট প্রোপার্টিজের চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।'
হাতিরঝিল থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, মহানগর প্রজেক্টের ওই বাড়ির জমির মালিক তামিমের বাবাসহ মোট তিনজন। তাদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই বাড়িতে ঢোকেন ডেভেলপার কোম্পানির
'পেস্নজেন্ট প্রোপার্টিজ'র লোকজন। তাদের সঙ্গে বহিরাগত কয়েকজন ছিলেন। তারা ল্যান্ড ওনারদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, 'তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তারা তামিমের বুকে কিল-ঘুষি দেন। এরপর তার গলা টিপে ধরেন। তামিম অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের কয়েকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।'
ময়নাতদন্তের জন্য তামিমের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান রুহুল কবীর খান।
তামিমের মামা মাসুদ করিম হাসপাতালের মর্গে সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন তামিম। পরে দীপ্তটিভির সম্প্রচার বিভাগে কাজ শুরু করেন। মহানগর প্রজেক্টের ওই বাড়ির সপ্তমতলায় দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকে তামিমের পরিবার।
ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, তামিমদের মোট পাঁচটি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল ডেভেলপার কোম্পানি পেস্নজেন্ট প্রোপ্রার্টিজের। কিন্তু তামিমরা যে ফ্ল্যাটে থাকে, সেটি বুঝিয়ে দিচ্ছিল না। বিষয়টি নিয়ে বছরখানেক আগে একটি মামলাও হয়।
তিনি আরও বলেন, 'বুধবার ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে তামিমদের একটি সমঝোতা হয়। আটতলায় দুটি ফ্ল্যাট তাদের দেওয়ার কথা জানানো হয়। সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে আটতলার ফ্ল্যাটে লেবার দিয়ে কিছু কাজ করাচ্ছিল তামিম। তখন হঠাৎ ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপক আব্দুল লতিফ মির্জা, তার সন্ত্রাসী বাহিনী ফ্ল্যাটে অতর্কিত হামলা চালায়। তামিমকে মারধর করতে থাকলে চিৎকার শুনে ওর বড়ভাই সামভির জাহান ইসলাম ছুটে এলে তাকেও মারধর করে হামলাকারীরা চলে যায়। তখন জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহায়তা চাওয়া হয়। এর মধ্যে তামিম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।'
এ বিষয়ে পেস্নজেন্ট প্রোপার্টিজের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।