আন্দোলনে আহত ২৩ হাজার, চোখ হারিয়েছেন ৪০০
প্রকাশ | ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে ৭৩৭ জন জীবন দিয়েছেন। ২৩ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনে ৭৩৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে এটা ভেরিফায়েড না। ছাত্রদের একটা তালিকা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, নিহত দেড় হাজারের বেশি। ছাত্ররা তাদের তালিকা আমাদের দিলে আমরা ক্রস চেক করে দেখব।
তিনি বলেন, আন্দোলনে আহত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি। এর মধ্যে ৪০০ জন চোখ হারিয়েছেন। দুই চোখ হারিয়েছেন ২০০ জন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আজ পর্যন্ত যে তথ্য আমাদের কাছে আছে, সেখানে ৭৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এগুলো যাচাই করা হয়নি। ছাত্রদের কিছু তথ্য আছে, প্রায় ১ হাজার ৫০০ জনের ওপরে। সেইগুলো আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করছি। তাদের তালিকা আমাদের দিক। কারণ কোনো কোনোগুলো ওভারল্যাপ হতে পারে। কাজেই সেগুলো বাদ দিলে আসল তালিকা হবে। তিনি বলেন, নিহতদের ক্ষেত্রে বেশ বড় রকমের একটা সমস্যা আমাদের ফেস করতে হয়েছে। কিছু কিছু আছে কেস করেনি, পোস্টমর্টেম হয়নি, সার্টিফিকেট পায়নি। আবার কিছু কিছু আসছে যখন ভর্তি হয়েছে, তখন তাদের সত্যিকারের ঠিকানা লুকিয়েছে। কারণ তারা ভয় পেয়েছেন, যদি ধরা পড়েন তাদের পরিবারের ওপর আক্রমণ চালাবে। কাজেই যখন মারা গেছে, আমাদের কাছে যেই ফলস ঠিকানা ছিল, সেটা নিয়েই কাজ শুরু করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আহতের সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজারের মতো। নানারকম
হ
ইনজুরড আছে। চোখের প্রায় ৪০০-এর মতো ইনজুরড। আবার কারও হাত-পা কাটা গেছে। যেগুলো হাসপাতালে ছিল, সেগুলো সব আমাদের ভেরিফায়েড করা। কিন্তু প্রথমদিকে ভালো হয়ে গেছে, চলে গেছে তারা আসল ঠিকানা দেয়নি।
গুরুতর আহত কতজন, এমন প্রশ্নের জবাবে নূরজাহান বেগম বলেন, গুরুতর আহত ৭০০-৮০০ জন। গুরুতর আহতদের মধ্যে ৪০০ জন চোখের, তার মধ্যে দুই চোখ হারিয়েছেন ৩৫ জন। অঙ্গহানি হয়েছে ২২ জনের। এর মধ্যে হাত কাটা গেছে ৩ জনের, পা কাটা গেছে ১৯ জনের। এ সংখ্যাটা আরও একটু বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০০ জনের মতো। এর মধ্যে ক্রিটিক্যাল মুসা। সে খুব ক্রিটিক্যাল রোগী, তাকে আমরা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর নেওয়ার চিন্তা করছি। বাকিদের মধ্যে একজনের স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি আছে, তাকেও হয়তো আমাদের বাইরে পাঠাতে হতে পারে। তবে আমরা চেষ্টা করছি, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এখানে চিকিৎসা দিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি। আগে সে হাত নাড়াতে পারত না, এখন সে হাত নাড়াতে পারছে। আশা করি, আমরা ক্রমান্বয়ে তাকে সুস্থ করে তুলতে পারব। যদি না পারি তাহলে তাকে পাঠাতে হবে।
নূরজাহান বেগম বলেন, মঙ্গলবার দুই মাস পূর্ণ হবে আমাদের অন্তর্র্বর্তী সরকারের। আমরা এতদিন কী কাজ করলাম; আমরা যখন দায়িত্বে আসলাম, তখন আমাদের হাসপাতালগুলোতে রোগীতে ভর্তি। চোখ অন্ধ হয়ে গেছে, এমন ছাত্র-জনতা আছে। হাত-পা কেটে ফেলতে হয়েছে, এমন ছাত্র আছে, জনতা আছে।
তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করলাম আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেওয়া। আর একটা ছিল কারা নিহত হলো, কারা আহত হলো, তাদের তথ্য সংরক্ষণ করা, তৈরি করা। আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিলাম, সেই কমিটিকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হলো। যারা আহত হলো বা নিহত হলো তাদের পরিবারকে আমাদের সহায়তা করতে হবে। আমরা একটা নীতিমালা করেও দিলাম। তারা খুব শিগগির আমাদের একটা তালিকা দিলেন, তবে ওটাই সর্বশেষ তালিকা না।