বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১
বেশ কিছুদিন ধরে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ ও আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গাজীপুরে শুক্রবার ছুটির দিনেও ৩০ শতাংশ পোশাক কারখানা খোলা ছিল। সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শ্রমিকরা কারাখানার কাজে যোগ দেন। কারখানার নিরাপত্তা রক্ষায় নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী ছাড়াও কাজ করেন শিল্প পুলিশের সদস্যরা।
শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের শিল্প এলাকায় বকেয়া বেতন, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, নতুন করে শ্রমিক নিয়োগসহ নানা দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে শ্রমিক বিক্ষোভ চলে আসছিল। এসব দাবি আদায়ে বিভিন্ন সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের হাজারো যাত্রী। আন্দোলনের কারণে জেলার অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদনও ব্যাহত হয়। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গাজীপুরে শুক্রবার ৩০ শতাংশ কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। বাকি কারখানাগুলোয় সাপ্তাহিক ছুটি চালু রাখা হয়েছে। গাজীপুরে বৃহস্পতিবার ৯টি কারখানায় উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। শুক্রবার ছুটির দিনে এসব বন্ধ কারখানা খোলা হয়নি।
গাজীপুরের ভোগড়া এলাকার একটি পোশাক কারখানার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তার কারখানায় কোনা শ্রমিক বিক্ষোভ হয়নি। তারপরও আশপাশের কারখানাগুলোর শ্রমিকরা যখন আন্দোলন করছিলেন, তখন কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। এতে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই বন্ধের দিনে (শুক্রবার) কারখানা খোলা রাখা হয়েছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের তথ্যমতে, পুরো জেলায় নিবন্ধিত কারখানা আছে ২ হাজার ৬৩৩টি। এর বাইরে অনিবন্ধিত কারখানা আছে প্রায় ৪০০-৫০০টি। এসব কারখানায় শ্রমিক কাজ করেন প্রায় ২২ লাখ। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর শ্রমিকরা ১৮ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে রাজি হয় মালিকপক্ষ। সম্প্রতি সচিবালয়ে সরকার, বিজিএমইএ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বিদ্যমান হাজিরা বোনাস ২২৫ টাকা করে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সব কারখানায় সরকার ঘোষিত নূ্যনতম মজুরি বাস্তবায়ন করারও ঘোষণা দেওয়া হয়। আর শ্রমিকদের সব বকেয়া মজুরি পরিশোধ করতে হবে ১০ অক্টোবরের মধ্যে। তারপরও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা গেছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, গাজীপুরে শুক্রবার বেশিরভাগ কারখানাই বন্ধ। তবে কারখানার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৩০ ভাগ কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার কোথাও কোনো শ্রমিক অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি।
Google News ফিড অনসরণ করুন
