দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি তাপমাত্রা বাড়ার আভাস
প্রকাশ | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
রাজধানীতে ঝলমলিয়ে উঁকি দিয়েছিল সূর্য। তবে একটু পরই কালো মেঘে ঢেকে যায় গোটা আকাশ। গর্জন করে নেমে আসে বৃষ্টি। আর এই অবস্থা থেমে থেমে চলতে থাকে দিনভর। একবারের জন্যও মেঘ কাটেনি আকাশে, ওঠেনি রোদও। শুক্রবার সরকারি ছুটি হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ বাসা থেকে বের হয়নি। বৃষ্টির কারণে বেসরকারি চাকরিজীবী ও নানা কাজে বের হওয়া সাধারণ মানুষকে বেকায়দায় পড়তে হয়। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, লঘুচাপ কেটে গেলেও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের আট বিভাগেই মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। আর বৃষ্টিপ্রবণতা থাকলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
এদিকে, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও বেতনা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে সাতক্ষীরায় মৎস্য ও কৃষি খাতে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে রোপা আমন, আউশ ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির ক্ষেত। সেই সঙ্গে ভেসে গেছে ছয় হাজার মৎস্যঘের ও দেড় হাজার পুকুর। একইসঙ্গে নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে পদ্মা। এতে দৌলতপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের পদ্মার চরের অন্তত ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ভাঙন ও বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
সাগরে লঘুচাপের কারণে কয়েকদিনের তীব্র গরমে অতিষ্ঠ নগরবাসীর জীবনে স্বস্তি নিয়ে আসে এবারের বর্ষণ। গত দুদিন বৃষ্টিতে ভিজেছে রাজধানী। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর অনেক জায়গায় বৃষ্টি ঝরে। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় তেমন কর্মব্যস্ততা ছিল না নগরবাসীর। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া খুব বেশি মানুষ সড়কে নামেননি। এদিন রিকশাচালক ও রাইড শেয়ার করা মোটর সাইকেল চালকেরা পড়েন যাত্রী সংকটে। একটু ছাউনি পেলেই লোকজনকে ভিড় করতে দেখা যায় বৃষ্টি থেকে বাঁচতে। বৃষ্টিতে ভ্রাম্যমাণ দোকানিদেরও পড়তে হয় ভোগান্তিতে।
সপ্তাহের অন্যান্য দিন সুযোগ না মেলায় অনেকে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই এদিন বাজারে ছুটে যান কেনাকাটা সারতে। অনেকে বৃষ্টির মধ্যেই ছাতা মাথায় জুমার নামাজ আদায় করতে বের হন। দুপুরের ভারী বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা যায়। এতে পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালক, যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
শুক্রবার সকালে আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
এ অবস্থায় রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায়; ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণও হতে পারে। তবে বৃষ্টি হলেও সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা (১-৩) ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।
এ অবস্থায় পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। তবে এ অবস্থার মধ্যেও তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
বর্ধিত ৫ দিনের শেষদিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।