প্রবৃদ্ধির গতি কমে বাড়বে মূল্যস্ফীতি পূর্বাভাস এডিবির
প্রকাশ | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
চলতি অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রবৃদ্ধি কমলেও মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে বলে তাদের পূর্বাভাস।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫ দশমিক ১ শতাংশে নামিয়ে এনেছে এডিবি। বুধবার সংস্থাটি তাদের এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। এর আগে গত এপ্রিলের পূর্বাভাসে তারা বলেছিল, প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হবে। অর্থাৎ এক ধাপে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১ দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়েছে এডিবি। গত এপ্রিলে এডিবি বলেছিল, চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসবে। কিন্তু এখন এডিবি বলছে, তা হবে না। বরং মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে উন্নীত হবে। এর মানে, এ বছরও দেশের সাধারণ মানুষকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।
গত জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। তার সঙ্গে সাম্প্রতিক বন্যার প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে এডিবি। এই দুই প্রভাবে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির গতি কমবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
রাজস্ব ও আর্থিক নীতিতে কঠোরতা আছে, তা অব্যাহত থাকবে বলে এডিবির ধারণা। এ ছাড়া ক্রয় ও বিনিয়োগ আরও কমবে। নেতিবাচক ঝুঁকি থাকায় সামষ্টিক অর্থনীতির পূর্বাভাস অত্যন্ত অনিশ্চিত। চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ভঙ্গুর
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও আর্থিক খাতের দুর্বলতা হলো এসব ঝুঁকির উৎস।
মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি
দুই বছর ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান। সাধারণ সীমিত আয়ের মানুষকে চড়া দামে বাজার থেকে পণ্য কিনতে হচ্ছে, যা তাদের কষ্ট বাড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘর ছাড়িয়ে যায়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরোর (বিবিএস) হিসাবে, জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগস্ট মাসে দেশের মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। তবু এখনো মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপর আছে। খাদ্যের মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১১ শতাংশের মতো আছে।
এ ছাড়া গত জুন পর্যন্ত আগের এক বছরের প্রতি মাসেই মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৯ শতাংশের আশপাশে ছিল।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি এখন অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এক বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপর আছে। মূল্যস্ফীতি এক ধরনের করের মতো, যা ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার ওপর চাপ বাড়ায়।
আয় বৃদ্ধির তুলনায় মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়ে গেলে গরিব ও মধ্যবিত্তের সংসার চালাতে ভোগান্তি বাড়ে। এমনিতেই বাজারের জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। এর সঙ্গে চিকিৎসা, পরিবহণসহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির এই চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।