শেয়ার কারসাজিতে সাকিবকে অর্ধকোটি টাকা জরিমানা

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সাকিব আল হাসান
শেয়ার কারসাজির দায়ে বিশ্বনন্দিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্যারামাউন্ট ইন্সু্যরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির অভিযোগ ওঠার তিন বছর পর জরিমানার মুখে পড়লেন এই ক্রিকেটার। মঙ্গলবার বিএসইসি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯২৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাকিবসহ চার ব্যক্তি এবং তিন প্রতিষ্ঠানকে মোট এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে সাকিব আল হাসানকে জরিমানা করা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। আরেক বিতর্কিত সরকারি কর্মকর্তা আবুল খায়ের হিরুকে ২৫ লাখ, ইশাল কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ৭৫ লাখ, মোনার্ক মার্ট লিমিটেডকে এক লাখ, আবুল কালাম মাতবরকে ১০ লাখ, লাভা ইলেক্ট্রোড ইন্ডাস্ট্রিজকে এক লাখ এবং জাহেদ কামালকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি। এর আগে ২০২২ সালে বিএসইসির এক তদন্ত প্রতিবেদনে শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম ওঠে, যাকে বাজার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে ২০১৭ সালে শুভেচ্ছাদূত করেছিল বিএসইসি। দুই বছর আগে বিডিকম, সোনালী পেপারস, ফরচুন সুজসহ কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে উদ্যোগ নিয়েছিল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। প্রাইমারি রেগুলেটর হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জও (ডিএসই) তদন্ত দল গঠন করে অভিযোগটি খতিয়ে দেখে। দুটি প্রতিবেদনেই সাকিব এবং তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান 'মোনার্ক হোল্ডিংস' এর নাম আসে। সাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ব্যক্তিগতভাবে এবং তার মালিকানায় থাকা কোম্পানির বিও হিসাবের মাধ্যমে শেয়ার দরে কারসাজি করেছেন। দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিব নানা ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার পর নামেন পুঁজিবাজারে, যৌথ অংশীদারত্বে খোলেন ব্রোকারেজ হাউস মোনার্ক হোল্ডিংস। কারসাজির অভিযোগ ওঠার পর মোনার্ক হোল্ডিংস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলেও তিনি বলেছিলেন, তিনি খেলা ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে মন্তব্য করবেন না। ২০১৭ সালে 'বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ' পালনের এক অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে সাকিবের সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান এম খায়রুল হোসেন। ওই অনুষ্ঠানে সাকিবও বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনিই এখন কারসাজির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন। আগস্টের গণ-অভু্যথ্যানের পর নতুন কমিশন ২৮ আগস্ট তাকে শুভেচ্ছাদূত থেকে বাদ দিয়েছে। বিশ্বসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের অন্যতম ব্যবসায়িক পার্টনার শেয়ারবাজারের বহুল আলোচিত গেম্বলার আবুল খায়ের হিরু। যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কারসাজি হওয়া শেয়ারগুলোয় বড় বিনিয়োগও করেছেন সাকিব। এক্ষেত্রে সাকিবও কারসাজির অংশীদার হিসেবে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। যার বিচার দাবি করে আসছিলেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু বিএসইসি তাকে শাস্তির আওতায় আনছিল না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্গঠিত বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন তাকে শাস্তির আওতায় আনল।