সাবেক সেনাপ্রধান আজিজের ২ ভাইয়ের এনআইডি বাতিল

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ
জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাতিল করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক শরিফুল আলম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, 'সাবেক সেনাপ্রধান আজিজের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফের করা চারটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। ওইসব এনআইডির কোনো সুবিধা দেশে আর মিলবে না।' আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ (জোসেফ) নিজেদের নামের পাশাপাশি বাবা-মায়ের নামও পরিবর্তন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। হারিছ আহমেদ তার নাম পরিবর্তন করে হন মোহাম্মদ হাসান। আর জোসেফ নাম পরিবর্তন করে হয়েছেন তানভীর আহমেদ তানজীল। তাদের এনআইডির তথ্য পরিবর্তনে আজিজ আহমেদ সুপারিশ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এখন তাদের চারটি এনআইডিই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ইসির সার্ভার থেকে। ফলে এনআইডি যাচাই-সংক্রান্ত কোনো সেবা আর তারা পাবেন না। হারিছ ও জোসেফের মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআইডি পরিবর্তনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে এসেছে জানিয়ে ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, 'এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' গত জুনে তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, 'আজিজ সাহেবের ভাই বোন, হারিছ চৌধুরী (খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তার রাজনৈতিক সচিব), বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেম উদ্দিনের পরিবার ভুল তথ্য দিয়ে এনআইডি করেছে জেনেছি। ২০-২৫ বছর পর হঠাৎ জানা গেল। এখন দুটো তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।' অভিযোগ যা ছিল একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিথ্যা তথ্য দিয়ে মোহাম্মদ হাসান নামে ২০১৪ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছিলেন হারিছ আহমেদ। ২০১৯ সালে তিনি এনআইডিতে নিজের ছবি পরিবর্তন করেন। আজিজ আহমেদের আরেক ভাই তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফ দুটি এনআইডি নিয়েছেন। এর একটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে, তানভির আহমেদ তানজীল নামে। অন্যটি করেছেন তোফায়েল আহমেদ জোসেফ নামে। আইন অনুযায়ী, মিথ্যা তথ্য দিয়ে এনআইডি করা এবং একাধিক এনআইডি করা- দুটিই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সাজা মওকুফ চেয়ে (জোসেফের জন্য) মায়ের করা আবেদনসহ সাজা মওকুফের সরকারি প্রজ্ঞাপনে হারিছ ও জোসেফের বাবার নাম আব্দুল ওয়াদুদ ও মায়ের নাম রেনুজা বেগম। কিন্তু হারিছ যে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট নিয়েছেন, এতে বাবার নাম সুলেমান সরকার এবং মায়ের নাম রাহেলা বেগম উলেস্নখ করা হয়েছে। ২০১৪ সালের ১৮ ফেব্রম্নয়ারি মোহাম্মদ হাসান নামে হারিছ আহমেদের জাতীয় পরিচয়পত্র ইসু্য করা হয়। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট তিনি এনআইডিতে নিজের ছবি পরিবর্তন করেন। একটি জাতীয় দৈনিক লিখেছে, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ছবি পরিবর্তনের আবেদন করেন মোহাম্মদ হাসান (হারিছ)। ওইদিনই ছবি পরিবর্তনের পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। তার আবেদনে রেফারেন্স হিসেবে লেখা আছে- 'জেনারেল আজিজ আহমেদ, সিএএস'। সিএএস হলো চিফ অব আর্মি স্টাফ। নাম পাল্টে তৈরি করা জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে দুই ভাই পাসপোর্ট করেছেন। এই মুহূর্তে তারা দেশের বাইরে আছেন। তবে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রশ্নে আজিজ আহমেদ দাবি করেছেন, ওই অভিযোগ সত্য নয়। আজিজ আহমেদের ভাই হারিছ আহমেদের স্ত্রী দিলারা হাসান ও তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফের স্ত্রী শামীম আরা খানও ভুয়া তথ্য দিয়ে ই-পাসপোর্ট নিয়েছেন বলে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।