বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ছয় দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে রওনা হয়ে রাত ৭টা ৫ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছান তিনি। যুবদল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িকে কর্ডন করে গুলশানের বাসায় নিয়ে যান। এর আগে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ম্যাডামের মেডিকেল বোর্ড গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে মিটিং করে তার শারীরিক অবস্থার বিভিন্ন রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেছেন। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, উনি এখন বাসায় যেতে পারবেন। বাসায় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে উনার চিকিৎসা চলবে। হঠাৎ জ্বর অনুভূত হওয়ায় গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের কেবিনে উনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। অধ্যাপক ডা. সাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে তার চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে। ৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। এ ছাড়া গত ২৫ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বাসানো হয়। ২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকরা। তার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকেও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে বারবার আবেদন-নিবেদন জানানো হয়। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার প্রতিবারই তা উপেক্ষা করেছে। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছিল। এমন অবস্থায় ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরদিন গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের নির্দেশে খালেদা জিয়া স্থায়ী মুক্তি পান। এভারকেয়ার হাসপাতালে থেকে ওই সুসংবাদ পান তিনি। তখন এক মাস ১২ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর ২১ আগস্ট বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে তার চিকিৎসা বাসায় চলছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতেও চেষ্টা চলছে। তবে উড়োজাহাজে ভ্রমণের মতো অবস্থা না থাকায় এখনই তাকে বিদেশ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।