দেশের পূর্বাঞ্চলে আগস্টের বন্যার এক মাস পর মোট প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে ধরেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। ফেনীসহ ১১টি জেলায় ভয়াবহ সেই বন্যায় মোট ৭৪ জনের মৃতু্যর তথ্য দিয়েছে মন্ত্রণালয়, আহত হয়েছেন ৬৪ জন।
অপরদিকে কৃষি, ঘরবাড়ি আর রাস্তাঘাটসহ সব মিলিয়ে ক্ষতি হয়েছে ১৪ হাজার ২৬৯ কোটি ৬৮ লাখ ৩৩ হাজার ৫২২ টাকার। ৯ লাখ ৪২ হাজার ৮২১ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিলেন ৪৫ লাখ ৫৬ হাজার ১১১ জন।
সচিবালয়ে মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির সবশেষ এই হিসাব দেন।
বাংলাদেশের উজানে পাহাড়ি ঢল আর অতি ভারী বৃষ্টির কারণে গত ২০ আগস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। দ্রম্নতই তা ছড়িয়ে যায় ফেনী, কুমিলস্না, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার,
হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্ণীপুর ও কক্সবাজারে।
বন্যা ১১টি জেলায় ভয়াবহ হলেও কৃষি মন্ত্রণালয় গত ৬ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিল, ফসলি জমি আক্রান্ত হয় ২৩ জেলার। এসব জেলার ২ লাখ ৮ হাজার ৫৭৩ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুর্দশায় পড়েন ১৪ লাখেরও বেশি কৃষক।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ফসলি জমি ২ লাখের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বন্যায় আক্রান্ত হয় ৩৭ লাখ ২ হাজার ৭৩৩ হেক্টর ফসলি জমি। ফলে সব মিলিয়ে কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা।
ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় নয়টি জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ৮০ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে রোপা আমনের উফশী জাতের বীজ, সার সহায়তা এবং খরচ বাবদ মোট ১৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা দেওয়ার হবে বলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান।
অপরদিকে বন্যায় প্রাণহানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ফেনীতে। গত ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী রেজা বন্যায় মোট ৭১ জনের প্রাণহানির তথ্য দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ২৯ জনই ফেনীতে মারা গেছেন।