জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভু্যত্থানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর-আদাবর এলাকায় ২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন ২২৭ জন এবং এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন দুইজন।
শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেঙ্গলি মিডিয়াম হাই স্কুলে আয়োজিত এক স্মরণ সভায় এই তালিকা প্রকাশ করে গণসংহতি আন্দোলন। '২৪-এর গণঅভু্যত্থানে মোহাম্মদপুর-আদাবর অঞ্চলে আহত-নিখোঁজ ও শহীদদের তালিকা প্রকাশ ও স্মরণ' শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানা।
লিখিত বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের মোহাম্মদপুর-আদাবর থানার সংগঠক ফাইয়াজ ফিরোজ বলেন, ৬৯, ৭১ এবং ৯০-এর গণঅভু্যত্থানের মতো মোহাম্মাদপুরের বাসিন্দারা ২৪-এর গণঅভু্যত্থানেও নিশ্চুপ-নিষ্ক্রিয় ছিলেন না। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-জনতার যে প্রতিরোধ, তার মধ্যে মোহাম্মদপুর ছিল গণঅভু্যত্থানের অন্যতম একটি স্পট। এখানে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে কারফিউ ভেঙে ছাত্র-জনতার ঢল রাজপথে নামে। বসিলা সড়ক থেকে মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড হয়ে টাউন হল পর্যন্ত এবং ওদিকে রিং রোড থেকে শ্যামলী পর্যন্ত ছাত্র-জনতার ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু আপনারা দেখেছেন, ছাত্র-জনতার এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ, র?্যাব, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসী ক্যাডাররা নিরস্ত্র মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এমনকি পুলিশ আন্দোলন দমাতে হেলিকপ্টার থেকেও গুলি ছোড়ে।
আন্দোলনে হামলাকারীদের নাম উলেস্নখ করে ফাইয়াজ ফিরোজ বলেন, আপনারা হয়তো ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজ দেখে থাকবেন, ৩৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ ও সাবেক কমিশনার তারিকুজ্জামান রাজিব, ৩৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহীন এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের এপিএস সরাসরি ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়।
তিনি আরও বলেন, নিরস্ত্র জনগণের ওপর এই গুলিবর্ষণ এবং সশস্ত্র হামলার ফলে মোহাম্মাদপুর, আদাবর এবং বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর মানুষ আহত, নিহত এবং নিখোঁজ হয়। আমাদের কাছে তালিকাভুক্তির ফলে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা এখন পর্যন্ত ২২ জন নিহত, ২২৭ জন আহত এবং দুজন নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা করতে পেরেছি। এই তালিকা ডিজিটালাইজেশনের কাজও চলছে। আগামী সপ্তাহে সাপোর্টিং ডকুমেন্টসসহ এই তালিকা সামারি করে স্বরাষ্ট্র এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হবে।