একশ' দিনে ৩৩টি বড় কাজ করতে চায় তথ্য মন্ত্রণালয়
প্রকাশ | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
মন্ত্রণালয়ের কাজকে আরও বেগবান এবং গতিশীল করতে আগামী একশ' দিনে ৩৩টি বড় কাজের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মপরিকল্পনার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলের (২০০৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত) সকল দুর্নীতি, অনাচার, দমনপীড়ন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, সাম্প্রতিক হত্যাযজ্ঞ ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ডকুমেন্টারি তৈরির জন্য প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর যৌথভাবে কাজ করবে বলে ঘোষণা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভু্যত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্র্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং এর আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থা গত এক মাসে যেসব ক্ষেত্রে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে তার একটি তথ্য বিবরণী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেন উপদেষ্টা।
১. বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারকে দক্ষ ও জনবান্ধব করার উদ্যোগ গ্রহণ। ২. জুলাই গণঅভু্যত্থানে শহীদ ও আহত ছাত্র-জনতা এবং তাদের পরিবারবর্গকে নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার। ৩. স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠনের উদ্যোগ। ৪. গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন প্রণয়নের উদ্যোগ। ৫. সম্প্রচার আইন প্রণয়নের উদ্যোগ। ৬. প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ সংক্রান্ত নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় সংশোধনের উদ্যোগ। ৭. বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য দপ্তর বা সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামোর আইনি
সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ৮. গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আইন, বিধি ও নীতিমালার প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে। ৯. সাংবাদিকদের বেতন কাঠামোর যৌক্তিক সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ১০. চলচ্চিত্র নির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ১১. ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের ডিজিটালাইজেশনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১২. অনলাইন নিউজ পোর্টালের লাইসেন্স প্রদান নীতিমালা যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১৩. বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের ৪টি শূন্যপদ পূরণ করা হবে।
১৮. চলমান প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে সম্পাদনে কিংবা প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১৯. বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) আয় বর্ধক কর্মসূচির জন্য বিজনেস সলু্যশন প্রোগ্রামের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন আইন, ১৯৫৭-কে যুগোপযোগী করা হবে।
২০. বাংলাদেশ বেতার থেকে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের পথে শীর্ষক, ছাত্র-জনতার গণঅভু্যত্থান ও শহীদ ছাত্র-জনতাকে নিয়ে এপিসোড প্রচার করা হবে।
২১. বাংলাদেশ বেতারের অনিয়মিত শিল্পীদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
২২. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ বা আহত ছাত্র-জনতার পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকার, আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, সংগঠিত হওয়া এবং সমন্বয়কদের মাধ্যমে সুশৃঙ্খলভাবে লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার বিবরণের ওপর ভিত্তি করে অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হবে।
২৩. ঢাকাসহ সারাদেশে দেওয়াল লিখন, স্স্নোগান এবং গ্রাফিতি তুলে ধরে তথ্য বিবরণীমূলক অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হবে।
২৪. ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ ও আহত ছাত্রদের পরিবারকে নিয়ে ২০০টি ফিচার প্রকাশসহ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সোশ্যাল মিডিয়া পস্ন্যাটফর্ম যুগোপযোগী করা হবে। তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে জনসচেতনতা তৈরিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে।
২৫. পতিত সরকারের ২০০৯-২০২৪ সাল পর্যন্ত সকল দুর্নীতি, অনাচার, দমনপীড়ন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, সাম্প্রতিক হত্যাযজ্ঞ ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে ডকুমেন্টারি তৈরির জন্য প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর যৌথভাবে কাজ করবে।
২৬. ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সকল শহীদের ওপর পরিচিতি ভিত্তিক ডকুমেন্টারি নির্মাণ এবং দেওয়ালে অংকিত গ্রাফিতির ওপর চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক অ্যালবাম তৈরি করা হবে।
২৭. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং রাষ্ট্র সংস্কার ভিত্তিক ফিচার প্রকাশ করা হবে।
২৮. বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে গণমাধ্যমসহ অন্যান্য অংশীজনের ভূমিকা ভিত্তিক সেমিনার জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট কর্তৃক আয়োজন করা হবে।
২৯. বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃক সেন্সর্ড অবস্থায় থাকা চলচ্চিত্রসমূহ নীতিমালা ও যৌক্তিকতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।
৩০. চলচ্চিত্রবিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি পুনর্গঠন করা হবে।
৩১. প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ আইন ২০১৮-এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ।
৩২. তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ -এর কতিপয় ধারা সংশোধন করে যুগোপযোগী করার উদ্যোগ।
৩৩. তথ্য কমিশনের বিদ্যমান চাকরির বিধিমালা যুগোপযোগী করা হবে।
এ ছাড়া তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থা থেকে নিয়মিত দাপ্তরিক কার্যক্রম দ্রম্নততার সঙ্গে অব্যাহত রয়েছে এবং অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।