বাংলাদেশে 'উগ্রবাদের উপস্থিতি' নিয়ে ভারত 'উদ্বিগ্ন' বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী। তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি 'স্থিতিশীল' হয়ে আসবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন। বর্তমান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার কিংবা ভবিষ্যতে যে কোনো সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহের কথাও তিনি
বলেছেন।
এনডিটিভি লিখেছে, চারদিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন রাহুল। ওয়াশিংটনের জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেস নেতা।
রাহুল বলেন, 'বাংলাদেশে উগ্রবাদীদের উপস্থিতি নিয়ে ভারতে উদ্বেগ আছে। এবং আমরাও উদ্বিগ্ন। আমি আত্মবিশ্বাসী, বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে এবং আমরা বর্তমান সরকার বা তারপর অন্য কোনো সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে সক্ষম হবো।'
এর আগে রাহুল গান্ধী যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ক্যাপিটল হিলে একদল মার্কিন আইন প্রণেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। রাহুল সে বিষয়ে বলেন, 'আইন প্রণেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরি। এবং তারাও এ বিষয়ে কথা বলেছেন।'
রাহুলের ভাষ্য, 'দেখুন, আমরা যে কোনো ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে। এবং আমরা এটা বন্ধ করতে চাই। এবং সত্যি বলতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সহিংসতা বন্ধ করা বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব। আমাদের সরকারের দায়িত্ব সহিংসতা বন্ধে চাপ প্রয়োগ করা।'
প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর মাস পেরিয়েছে, এখনো তিনি সেখানেই আছেন।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশে হিন্দু ধর্মের মানুষের ওপর হামলা, তাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কিছু ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে দিলিস্নতে সর্বদলীয় বৈঠকে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
এরপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনালাপে অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে আশ্বাস দেন।
এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তী সরকারের সঙ্গে দিলিস্নর সম্পর্ক এখন কেমন হবে, তা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার লক্ষ্েণৗয়ে ভারতের তিন বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারের এক যৌথ সম্মেলনে রাজনাথ সিং বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি পর্যালোচনার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ''ভারত একটি 'শান্তিপ্রিয় দেশ'। তবে 'অপ্রত্যাশিত' ঘটনার মুখোমুখি হলে শান্তি রক্ষার স্বার্থে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকা দরকার।"
রাজনাথের এই বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, 'আমি কোনো অবস্থাতেই মনে করি না যে ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো যুদ্ধ বিগ্রহ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। উনি এটা নিজের দেশের কনজাম্পশনের জন্য বলেছেন কি না, সেটাও আমাদের বুঝতে হবে।'