রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে কুপিয়ে ও হামলাকারী একজনকে পিটিয়ে হত্যা

বগুড়া প্রতিনিধি
  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে কুপিয়ে ও হামলাকারী একজনকে পিটিয়ে হত্যা

বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় হামলাকারীদের একজকে পিটিয়ে আহত করে মিজানের সহযোগীরা। হামলাকারী লেদু নামের ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

৯ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল এলাকায় মিজানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সে সময় মিজানের সঙ্গে থাকা লোকজনের মারপিটে আহত হন লেদু নামের

এক হামলাকারী। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই মিজানের লাশের সঙ্গে থাকা দলের কর্মী-সমর্থকরা লেদুর ওপরে হামলা করে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।

এ সময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে হামলাকারীরা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে হামলা চালায়। এ সময় যমুনা টিভির বগুড়া বু্যরো মেহেরুল সুজোনসহ বেশ কয়েকজকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

নিহত মিজান বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও গোকুল উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আফছার আলী সাকিদারের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, মিজান তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে গোকুল বন্দরে গোডাউন এলাকায় গল্প করছিলেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে ১০-১২টি মোটর সাইকেলে একদল দুর্বৃত্ত সেখানে আসে। তারা মিজানকে ঘিরে ফেলে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মোটর সাইকেল যোগে মহাস্থানের দিকে চলে যায়।

গুরুতর অবস্থায় মিজানকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা জানায়, ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রম্নয়ারি গোকুল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সনি রহমান খুন হন। সনি খুনের সঙ্গে জড়িত যুবদলের বহিষ্কৃত নেতার নেতৃত্বে মিজানকে খুন করা হয়। সনি রহমান খুনের পর থেকেই মিজানের সঙ্গে যুবদলের ওই নেতার দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর যুবদলের ওই নেতা বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন। এক সপ্তাহ আগে যুবদলের ওই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের ধারণা, বহিষ্কারের পেছনে মিজানের হাত রয়েছে। এ কারণেই ক্ষুব্ধ হয়ে মিজানকে খুন করা হয়েছে।

এদিকে ঘাতক সন্দেহে রাতেই গোকুল এলাকায় স্থানীয় লোকজন লেদুকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে মিজানের অফিসে আটক করে রাখে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত লেদুকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু ভর্তির আগেই সেখানে মিজানের লোকজন লেদুকে ফের গণপিটুনি দিলে রাত আনুমানিক ১১টায় তিনি মারা যান। লেদুর মৃতু্যর বিষয়টি বগুড়া মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল হোসেন নিশ্চিত করেছেন।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, 'হত্যাকান্ডের তদন্তের বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করেছে। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে