রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
সাভারে মাদ্রাসাছাত্র হত্যা

হাসিনা-কাদেরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

যাযাদি ডেস্ক
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
হাসিনা-কাদেরসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছায়াদ মাহমুদ খান (১২) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০-৫০ জনের নাম উলেস্নখ করেছে নিহতের পরিবার। অন্যদিকে সারাদেশে ইন্টারন্টে বন্ধ রাখায় চট্টগ্রামে একটি মামলা হয়েছে। এতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও পলকসহ ১৫ জনের নাম উলেস্নখসহ আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সাভারে ছায়াদ মাহমুদ খান হত্যার ঘটনায় সোমবার সকালে মামলাটি করেন নিহতের বাবা বাহাদুর খান। নিহত ছায়াদ মাহমুদ খান মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানার ধলস্না এলাকার বাহাদুর খানের ছেলে। ছায়াদ জাবাল-ই-নূর দাখিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা (৭৬), আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের (৭২), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (৭৫), সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক (৭০), বিশ্বব্যাংকের সাবেক

অতিরিক্ত সচিব ড. মাহমুদ উল হিক (৫০), রানা ওরফে ব্যস্ত রানা (৫০), সাভার উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আতিকুর রহমান আতিকসহ ১৫ জনের নাম উলেস্নখ করা হয়েছে। এ সময় অজ্ঞাত পরিচয় আরও ২০-৫০ জন আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) আতিকুর রহমান আতিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, '১৫ জনের নাম উলেস্নখসহ অজ্ঞাত আরও ২০-৫০ জনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর ছায়েদ মাহমুদের বাবা বাহাদুর খান একটি মামলা করেছেন।'

ইন্টারনেট বন্ধ রাখায়

চট্টগ্রামে মামলা

আমাদের চট্টগ্রাম বু্যরো জানান, সারাদেশের ইন্টানেট ও ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধ রাখার কারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক ও পরিবহণ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. আলী আরাফাতসহ ১৫ জনের নাম উলেস্নখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০০ জনকে আসামি করে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইবু্যনাল আদালতে মামলা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কাউন্টার টেররিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সোমবার চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইবু্যনালের বিচারক জহিরুল কবির চৌধুরীর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মো. নুর মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইবু্যনালের সরকারি কৌঁসুলি মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।

মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক ও পরিবহণ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি জুনাইদ আহমদ পলক, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপস্নব কুমার, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সমাজ কল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল সোহায়েল, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের অর্থ-সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিক ও বন্দর কর্মচারী পরিষদের সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ জাবেদ।

জানা যায়, মামলার বাদী নুর মোহাম্মদ (২২) একজন ব্যবসায়ী। নুর মোহাম্মদ ফেনী জেলার সাফিয়াবাদ এলাকার ভুঞা বাড়ির মো. নুর নবীর ছেলে। নুর মোহাম্মদ অনলাইন ও সফটওয়ারভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুরন্ত সাপস্নায়ার এবং দুরন্ত বাজারের স্বত্বাধিকারী। সারাদেশে গত ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় বাদীর ব্যবসায় ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকা। ইন্টারনেট বন্ধে জড়িতদের শাস্তি ও আসামিদের ব্যক্তিগত ও দলীয় সম্পত্তি থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা চেয়ে এ মামলা করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য বাদীর অনলাইন ভিত্তিক প্রায় ২০০ কর্মচারী ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অনলাইনে পণ্য সাপস্নাইয়ের জন্য দুরন্ত সাপস্নায়ারের নিজস্ব মালিকানাধীন একাধিক পণ্য বহনকারী পরিবহণ ও ভাড়া করা পরিবহণ সাপস্নাইয়ের কাজে নিয়োজিত আছে। অনলাইনে বাদীর দৈনিক ব্যবসায়িক লেনদেন প্রায় ২০ লাখ টাকা। ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশে ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে দেশের বাণিজ্য খাতে এক লাখ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বাদীর ক্ষতি হয় ১০ কোটি টাকা। ক্ষতি হওয়া অর্থ আসামিদের ব্যক্তিগত ও দলীয় সম্পত্তি থেকে পূরণ করার কথাও এজাহারে উলেস্নখ করেন বাদী।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী নওশাদ আলী জানান, মামলা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনের নাম উলেস্নখ করে ও ১০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে এই মামলাটি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের ও জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাউন্টার টেররিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দেবে বলেও জানান এই আইনজীবী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে