রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

অর্থ পাচার বিষয়ে এফবিআইয়ের সহায়তা নেবে দুদক

যাযাদি ডেস্ক
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
অর্থ পাচার বিষয়ে এফবিআইয়ের সহায়তা নেবে দুদক

অর্থ পাচার বিষয়ে প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সহায়তা নেবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার এফবিআইয়ের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। বৈঠক শেষে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

দুদক সচিব জানান, প্রতিনিধি দলে ছিলেন এফবিআইয়ের অ্যাসিট্যান্ট লিগ্যাল অ্যাটাশে রবার্ট ক্যামেরন ও পুলিশ লিয়াজোঁ স্পেশালিস্ট মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের মানিলন্ডারিং বিভাগের মহাপরিচালক মোকাম্মেল হক, পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ও আব্দুলস্নাহ-আল-জাহিদ।

খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানতে চেয়েছে, কী ধরনের সহযোগিতা তাদের প্রয়োজন।'

তিনি বলেন, 'বলা যায়, এটি এক ধরনের সৌজন্য সাক্ষাৎ। এই সাক্ষাতে দুদকের মানিলন্ডারিং শাখার ডিজি'র সভাপতিত্বে একটি সভা হয়। সেখানে দুর্নীতি দমন কমিশন কীভাবে কাজ করে, তদন্ত প্রক্রিয়া, তথ্যানুসন্ধান, গোয়েন্দা

কার্যক্রম এসব বিষয় জানতে চেয়েছে। দুদকের বিভিন্ন উইংয়ের মাধ্যমে যেসব কার্যক্রম পরিচালিত হয়, সেসব তথ্য তারা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট উইং থেকে তাদের জানানো হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতার প্রয়োজন বোধ করি তাদের কাছে, সেসব ক্ষেত্র 'এক্সপেস্নার' করার কথা বলেছে। ভবিষ্যতে কোনো ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে, তাও জানিয়েছেন।'

পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেখানে একটি ভূমিকা রাখতে পারে দুদক। এ বিষয়ে এফবিআইয়ের সহযোগিতা কমিশন নেবে কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, 'অর্থ পাচার বিষয়টি দুদকের নতুন ইসু্য নয়, সবসময়ই অর্থ পাচার বিষয়ে দুদক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের কার্যক্রমে যদি কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, নিশ্চয় দুর্নীতি দমন কমিশন সেই সহায়তা নেবে।'

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে দুদক উদ্যোগ নিচ্ছে কি না, সেই প্রশ্নের জবাবে খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, 'দুদকের একটা উইং আছে পাচার হওয়া টাকা কীভাবে উদ্ধার করা যায়, সে ব্যাপারে কার্যক্রম চলছে। প্রয়োজন হলে সেই কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।'

টাকা ফেরত আনার বিষয়ে দুদক কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'দুদক হাত গুটিয়ে কেন থাকবে, দুদকের কার্যক্রম চলমান আছে এবং চলবে।'

আর টাকা পাচার বন্ধের উদ্যোগের বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, 'এ বিষয়ে দুদকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তারাও কাজ করছে। দেশের অর্থ যাতে পাচার না হয়, তার জন্য বিভিন্ন মেকানিজম তৈরি করা হচ্ছে। সেগুলো যদি সফলভাবে কার্যকর হয়, তাহলে পাচার প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।'

পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা বা পাচার ঠেকানোর কাজে দুদক ব্যর্থ হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমি অবশ্যই বলব কখনোই ফেল করেনি। এত বড় প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে, কেন ফেল করবে। পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন রকম প্রচেষ্টা চলছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। মেজন্য আমাদের অনেকগুলো মন্ত্রণালয় বা সংস্থার মাধ্যমে কাজ পরিচালনা করতে হয়। সেজন্য কিছু ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ হয়ে যায়। পাচার করা টাকার ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ওইসব দেশের কী আইন বা বিধানাবলি রয়েছে, সেসব জেনে মেনে সে অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করা হয়। এসব কার্যক্রম দুদক চালাচ্ছে। হয়ত এখন আরও তৎপর হবে, নতুন মেকানিজম ডেভেলপ করা হবে বা এর থেকে অন্য কোনো সিস্টেমে করা যায় কি না, এগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। আশা করি ইতিবাচক ফলাফল পাব।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে