এস আলমের বিরুদ্ধে সিআইডির অনুসন্ধান শুরু

প্রকাশ | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
সাইফুল আলম
ব্যাংক লুট, অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগে সমালোচিত চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী গ্রম্নপ এস আলমের মানিলন্ডারিং নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। শনিবার এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান। তিনি জানান, এস আলম গ্রম্নপের মালিক মো. সাইফুল আলমসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, ওভার ইনভয়েস, আন্ডার ইনভয়েজ ও সংঘবদ্ধ অপরাধের মাধ্যমে হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল, ঋণের নামে অর্থ লোপাট এবং অর্থ পাচারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের দখল করেছিল এস আলম গ্রম্নপ। ব্যাংকটির ঋণের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ বা ৫০ হাজার কোটি টাকাই এই গ্রম্নপের কাছে। ওই বছরের অক্টোবরে অনেকটা একই কায়দায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় গ্রম্নপটি। ব্যাংকটি থেকে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে তারা। সিআইডি কর্মকর্তা আজাদ রহমান জানান, সিআইডি প্রায় এক লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের বিষয়ে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে। বিভিন্ন সূত্রে সিআইডি জানতে পেরেছে এস আলমসহ সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে দেশেই পিআর বা পারমানেন্ট রেসিডেন্স গ্রহণ করেছেন। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও সাইপ্রাসসহ ইউরোপে বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে নিজের ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রয় ও ব্যবসা পরিচালনা করেছেন। পাচার করা অর্থে সিঙ্গাপুরে প্রায় ২৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের 'ক্যানালি লজিস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড' নামে প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন সাইফুল আলম। এছাড়া ভুয়া নথি তৈরি, জাল-জালিয়াতি এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিদেশে পণ্য আমদানি-রপ্তানি ও বিনিয়োগের জন্য নামে-বেনামে ৬টি ব্যাংক থেকে ৯৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে বিদেশে পাচার করেছেন। বিদেশে শেল কোম্পানি (নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান) খুলে অফশোর ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে বিদেশে পাচার করেছেন। এস আলম, তার স্ত্রী ফারজানা পারভীন, ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলমসহ তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সংঘবদ্ধভাবে মানিলন্ডারিং অপরাধ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে সিআইডি। এই বিষয়ে মানিলন্ডারিং আইন ও বিধি অনুযায়ী সিআইডি অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।