মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমেছে ৬ টাকা

যাযাদি রিপোর্ট
  ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
পেট্রোল ও অকটেনের দাম কমেছে ৬ টাকা

আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে দেশে সেপ্টেম্বরের জন্য জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করেছে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার।

নতুন দরে জ্বালানি তেলের দাম সর্বনিম্ন ১ টাকা ২৫ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৬ টাকা পর্যন্ত কমেছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারে ৬ টাকা এবং প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১ টাকা ২৫ পয়সা করে কমানো হয়েছে।

জ্বালানি তেলের দাম এই হারে পুনর্নির্ধারণ করে শনিবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এদিন মধ্যরাত থেকেই নতুন দাম কার্যকর হয়েছে।

এর আগে সরকারবিরোধী আন্দোলন দমনে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ সরকার আগস্ট মাসের জন্য জ্বালানি তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করতে পারেনি। তখন জ্বালানি বিভাগ থেকে বলা হয়েছিল, পরিবর্তন খুবই সামান্য, সে কারণে আর ঘোষণা করা হচ্ছে না।

জ্বালানি বিভাগ বলছে, ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিন এতদিন বিক্রি হয়েছে লিটার প্রতি ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা; এই দাম থেকে ১ টাকা ২৫ টাকা কমিয়ে ডিজেল ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে।

পেট্রোল ১২৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এই দাম লিটারে ৬ টাকা কমিয়ে ১২১ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া অকটেনের লিটার প্রতি দাম ১৩১ টাকা; এখান থেকেও ৬ টাকা কমিয়ে ১২৫ টাকা পুনর্র্নির্ধারণ বা সমন্বয় করা হয়েছে।

গত মার্চ থেকে জ্বালানি তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করে আসছে সরকার যা এপ্রিল থেকে কার্যকর হচ্ছে।

শনিবার সকালে খুলনার খালিশপুরে নির্মাণাধীন রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার পস্ন্যান্ট প্রকল্প পরিদর্শনের আগে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অন্তর্র্বর্তী সরকারের বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

তিনি জানান, 'আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে দেশেও দাম কমানো হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান ফর্মুলা অনুযায়ী, জ্বালানি তেলের দামের মধ্যে বিপিসির জন্য যতটা মুনাফা রয়েছে, সেটাও কমানো হয়েছে।'

উপদেষ্টা জানান, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার বিপিসির মুনাফা কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর আগে, ২৮ আগস্ট পেট্রোবাংলায় বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ও অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশের মানুষ যাতে কম দামে তেল কিনতে পারে, সেটি মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তেলের দাম নির্ধারণের কথা ভাবা হচ্ছে।

এর আগে নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদু্যতের দাম বাড়ানোর বিধান বাতিল করে সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার।

গত ২২শে আগস্ট উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নতুন খসড়া অধ্যাদেশের অনুমোদন দেওয়া হয়।

সেখানে 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আইন, ২০০৩' সংশোধন করে অধ্যাদেশে নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদু্যতের দাম বাড়ানোর ৩৪(ক) ধারা বিলুপ্ত করা হয়।

এর আগে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদু্যৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্র্নির্ধারণ ও সমন্বয়ে সরকারকে ক্ষমতা দিয়ে 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২' জারি করা হয়।

এই অধ্যাদেশের কারণে সরকার বিশেষ পরিস্থিতিতে কোনো জনশুনানি ছাড়াই নিজস্বভাবে জ্বালানি গ্যাস ও বিদু্যতের দাম সমন্বয় করতে পারত।

পরে ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে অধ্যাদেশটি পাস হলে তা আইনে রূপ নেয়।

এরপর মন্ত্রণালয় থেকে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছিল গ্যাস, বিদু্যৎ ও তেলের দাম। যার কারণে গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

সে সময় 'বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩' সংশোধন করে অধ্যাদেশে নির্বাহী আদেশে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদু্যতের দাম নির্ধারণ, পুনর্র্নির্ধারণ বা সমন্বয়ে সরকারের ক্ষমতা' শিরোনামে ৩৪(ক) ধারা যুক্ত করা হয়।

এখন ৩৪(ক) ধারা বিলুপ্ত ঘোষণা করায় আগের মতো গণশুনানির মাধ্যমেই বিইআরসি জ্বালানির দাম নির্ধারণ হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে সবশেষ জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ হয়েছিল চলতি বছরের জুন মাসে।

পহেলা জুনে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ছিল ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা। আর প্রতি লিটার অকটেন ১৩১ টাকা ও প্রতি লিটার পেট্রোল ১২৭ টাকা। যা পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে কমে আসছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে