বিগত সরকারের আমলে যেসব খাতে সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে তার মধ্যে বিদ্যুৎ খাত অন্যতম। এর নেতৃত্বে ছিল সামিট গ্রুপ। কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়া রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, ক্যাপাসিটি চার্য বাবদ বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, বিশেষ আইনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহের নামে হাজার কোটি টাকা পাচারসহ টেন্ডার ছাড়া জ্বালানি অবকাঠামো খাতে বড় বড় প্রকল্পের অনুমোদন বাগিয়ে নেয় সামিট।
অভিযোগ রয়েছে দেশের জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে কমিশন বাণিজ্যের। অন্যদিকে দেশের একমাত্র এলএনজি টার্মিনালের মালিক যেহেতু সামিট, তাই গ্যাসের দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি না করে এলএনজি আমদানি বাড়ানোর জন্যও এই প্রতিষ্ঠানটির দায় রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিদ্যুৎ খাতের সাবেক কর্মকর্তারা যায়যায়দিনকে জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিশেষ আইন ২০১০ পাস করা হয়। এতে যেসব সুবিধা রাখা হয় তার পুরোটাই ভোগ করেছে সামিট পাওয়ার। কুইক রেন্টাল চালুসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে ক্যাপাসিটি চার্য প্রদান যার মধ্যে অন্যতম। এমনকি সে সময় এই সব আইনের বিরোধিতা যারা করেছিল তাদের চাকরিচ্যুত এবং পদাবনতি করা হয়েছে। এককথায় সামিট পাওয়ারকে সুবিধা দিতেই বিদ্যুৎ আইন সংশোধন করা হয় বলে মন্তব্য করেন তারা।
অন্যদিকে গত ১০ বছরে চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করে বিগত সরকার। যার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশই বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্র। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মোটা অঙ্কের ঋণের ব্যবস্থাও করে সাবেক সরকার। এমনকি বেসরকারি এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহের দায়িত্ব নেয় জ্বালানি বিভাগ। আর সরকার যদি জ্বালানি সরবরাহ করতে না পারে তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু ক্যাপাসিটি চার্য বাবদ বড় অঙ্কের টাকা দিতে হতো তাদের। শুধু তাই নয়, এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে যে ঋণ নেওয়া হয়েছে তার গ্যারেন্টর থাকত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এমন সব জনবিরোধী আইন করে সামিটসহ সাবেক সরকারের অধিনস্ত কর্তা-ব্যক্তিদের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে দেওয়া হয় বিশেষ সুবিধা।
সর্বশেষ দেশের জ্বালানি সংকট প্রকটকালেও বিশেষ করে গ্যাস সংকটের মধ্যে গত বছর নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ঘাটে সামিটকে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেয় সরকার। আশপাশের সব শিল্প-কারখানা যখন গ্যাসের অভাবে বন্ধ তখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সামিটকে এই গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের জন্য কুমিল্লা থেকে মেঘনা ঘাট পর্যন্ত পাইপ লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।
বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক কর্মকর্তারা জানান, এভাবেই সামিটকে অসম সুযোগ-সুবিধা দেয় বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকার এবং এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ নেয় তৎকালীন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অন্যদিকে সামিটের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পর থেকেই নো ইলেকট্রিসিটি নো পেমেন্ট পদ্ধতি বাতিল করা হয়। আবার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাদের বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি দফায় দফায় নবায়ন করা হয়।
পাওয়ার সেলের সাবেক ডিজি বিডি রহমতুল্লাহ বলেন, আমরা যখন সরকারকে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে স্বল্প খরচে বসে থাকা বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর কথা বলি তখন সরকার তা বাতিল করে দেয়। এর বিপরীতে সামিটের মতো সরকারের কাছাকাছি থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপুল পরিমাণ ঋণ দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেয়। সর্বশেষ বিদ্যুৎ জ্বালানির দাম নিজেদের ইচ্ছে মতো বাড়িয়ে এসব কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়া হয়। যার সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারি সামিট পাওয়ার। এই সাবেক কর্মকর্তার মতে সামিটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুবিধা দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা অনৈতিক আয়ের সুযোগ করে দেওয়া হয়।
এখানেই শেষ নয়, বিদ্যুতের বাইরেও জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে সামিট ছিল অন্যতম প্রভাবক। তারাই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যাদের দেশের গভীর সমুদ্রে এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস হতে গ্যাস উত্তোলন না করে সরকারকে আমদানিতে উৎসাহিত করা। বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমদানিনির্ভর যে জ্বালানি খাত তৈরি করতে চেয়েছিল তারই অংশ হিসেবে সামিটকে তৃতীয় ও চতুর্থ এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়। অথচ ভোলায় ব্যাপক গ্যাস পাওয়া এবং উত্তোলনের সক্ষমতা থাকলেও অর্থের অভাব দেখিয়ে তা পরিবহণে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এদিকে সামিট গ্রুপের ব্যবসা মূলত বাংলাদেশ কেন্দ্রিক হলেও গ্রুপটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর হোল্ডিং কোম্পানি ‘সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল’ নিবন্ধিত হয়েছে সিঙ্গাপুরে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির আয়ের বড় অংশই দেশের কাজে আসেনি এবং এই বিদেশি নিবন্ধন থাকার কারণে টাকা পাচারের সুযোগও পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মূলত বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের শাসন আমলে প্রতাপের সঙ্গে ব্যবসা করে দেশের প্রথম শত হাজার কোটি টাকার মালিকও হয়েছেন এই সামিট গ্রুপের মোহাম্মাদ আজিজ খান। শুধু তাই নয়, সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় রয়েছে তার নাম। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার। যা বিদ্যুৎ খাতে সর্বোচ্চ বেসরকারি বিনিয়োগ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা করছে সরকারের সঙ্গে চুক্তি বা অনুমোদনের ভিত্তিতে। ফলে বৈচিত্র্যপূর্ণ বিনিয়োগ সামিট গ্রুপের ক্ষেত্রে তেমন একটা দেখা যায়নি। প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদের বাজার সংক্রান্ত যেসব ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয়, সেগুলো সামিটের ক্ষেত্রে করতে হয়নি। আবার সামিটের বিদ্যমান ব্যবসাগুলোয় নতুন পণ্য উদ্ভাবনের সুযোগও নেই বললেই চলে। শুধুমাত্র সরকারের সরাসরি সহায়তায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
দেখা গেছে, সামিট গ্রুপের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল ক্রেতা প্রধানত সরকার। ফলে সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে কোনো দায় তাদের ছিল না। কেবল সরকারকে খুশি করেই ব্যবসা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে তারা। অন্যদিকে এসব প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা দিতে গিয়ে দেশের বিদ্যুৎ খাতের একক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বিপিডিবি এখন আর্থিক সংকটে সামিটের মতো বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান (আইপিপি)গুলোর পাওনা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মূলত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সামিট তার ব্যবসা বাড়াতে থাকে বাংলাদেশে। বিশেষ করে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র (আইপিপি) ও এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের ক্ষেত্রে সামিটের প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বেশি। নানা মাত্রায় দেওয়া হয়েছে কর ও শুল্ক সুবিধা। এর ধারাবাহিকতায় গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে একক আধিপত্য চলে সামিট গ্রুপের। প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ ও আন্তর্জাতিক পরিসরে বড় কোনো বাণিজ্যিক কার্যক্রম দাঁড় করাতে না পারলেও বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করেছে দাপটের সঙ্গে। আইনি ইনডেমনিটি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনুকূল চুক্তির সুবাদে ক্যাপাসিটি চার্জ ও বিক্রয় মূল্যসহ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পাওয়া আয়ই হয়ে উঠেছে তাদের ব্যবসার বড় ভিত্তি।
প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশি বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মোট স্থাপিত সক্ষমতার প্রায় ২১ শতাংশই সামিটের। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা রয়েছে ২০টি। যার সক্ষমতা প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট। দেখা গেছে, চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র বানানোর অনুমতি দিয়েছে সরকার। ফলে গত ১৫ বছর বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে ক্যাপাসিটি চার্য বাবদ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরের জুলাইয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিদ্যুৎ বিভাগের উপস্থাপিত তথ্যে উঠে আসে, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জয়েন্ট ভেঞ্চারটিকে হিসাবে না নিলে দেশে আইপিপিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্যাপাসিটি চার্জ নিয়েছে সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত কেবল সামিট গ্রুপকে ৪ হাজার ৪০৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে পরিশোধ করা হয়েছে, যা এ সময়ের মধ্যে পরিশোধিত মোট ক্যাপাসিটি চার্জের প্রায় ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আঞ্চলিক ফাইবার অপটিকস কেবলের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতকে যুক্ত করেছে সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে সাবমেরিন কেবল স্থাপনের বিষয়টিও এখন প্রক্রিয়াধীন। কোম্পানিটির সাবসিডিয়ারি সামিট টাওয়ার্স লিমিটেডের মাধ্যমে দেশের টেলিকম খাতের টাওয়ার শেয়ারিং ব্যবসায়ও নাম লিখিয়েছে সামিট গ্রুপ। সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেডের (এসএপিএল) মাধ্যমে বন্দর ব্যবসায় যুক্ত হয়েছে সামিট গ্রুপ। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় অফ-ডক (অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল) ফ্যাসিলিটিগুলোর অন্যতম। তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি দেশের রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের ২০ শতাংশ এবং আমদানি পণ্যের কনটেইনারের ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ হ্যান্ডলিং করে। মুন্সীগঞ্জে এসএপিএলের গড়ে তোলা মুক্তারপুর টার্মিনাল দেশে বেসরকারি খাতের প্রথম অভ্যন্তরীণ নৌ-টার্মিনাল ফ্যাসিলিটি। কোম্পানিটির একটি সাবসিডিয়ারি সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট ইস্ট গেটওয়ে (আই) প্রাইভেট লিমিটেডের মাধ্যমে ভারতের কলকাতা বন্দরের জেটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এ ছাড়া কোম্পানিটির সিঙ্গাপুরভিত্তিক সাবসিডিয়ারি সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট পিটিই লিমিটেড আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানি ও ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং কোম্পানিগুলোর সঙ্গে লিয়াজোঁ করে। চট্টগ্রাম, মুক্তারপুর ও কলকাতার বন্দর ব্যবসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সংগ্রহ করে এ সাবসিডিয়ারি। ভারতের পাটনায়ও একটি বন্দর উন্নয়নের কাজ পেয়েছে সামিট, যা এখন নির্মাণাধীন।
আবাসন খাতের ব্যবসার সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট রয়েছে সামিট গ্রুপ। ঢাকায় ৩২ লাখ বর্গফুট স্পেস নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে গ্রুপটি। পাঁচ তারকা ও চার তারকা হোটেল নির্মাণের কাজও করেছে তারা। এ ছাড়া বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাই-টেক পার্ক স্থাপনের কাজ করেছে সামিট টেকনোপলিস লিমিটেড।
২০১৬ সালে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারীকে নিয়ে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করে। পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বিদ্যুৎ প্রকল্প উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) চুক্তি করে সামিট। এছাড়া ফিনল্যান্ডভিত্তিক ওয়ার্টসিলার সঙ্গে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে সামিট। বর্তমানে জেরা, জিই, মিৎসুবিশি ও তাইয়ো ইন্স্যুরেন্স সামিটের ইক্যুইটি হোল্ডার্স হিসেবে রয়েছে।
১৯৭৩ সালে প্রথম ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ২০১৮ সালে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯১০ মিলিয়ন ডলার। ওই বছর তিনি ফোর্বসের তালিকায় সিঙ্গাপুরের ৩৪তম ধনী ব্যক্তি ছিলেন। ২০১৯ সালের জাপানের পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি জেরার কাছে সামিটের ২২ শতাংশ শেয়ার ৩৩০ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন। তার সম্পদের পরিমাণ ২০২০ সালে ছিল ৯৫৫ মিলিয়ন, ২০২১ সালে ৯৯০ মিলিয়ন ডলার এবং এ বছর তিনি বিলিয়ন ডলার ক্লাবে প্রবেশ করেন।