সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশ থেকে পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়েছে। অর্থ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা চেয়ে ইতোমধ্যে যোগাযোগ শুরু করেছে অন্তর্র্বর্তী সরকার। বুধবার অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস উইং জানায়, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও অন্য প্রভাবশালী ব্যক্তি ব্যাংকিং খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও প্রতারণার মাধ্যমে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণে অর্থ আত্মসাৎ করেছে। বিদেশে পাচার করা হয়েছে সেই অর্থ। এর সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলছে। আত্মসাৎ করা এই অর্থের পরিমাণ লক্ষাধিক কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তারা আরও জানায়, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের
সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার কাজে ইতোমধ্যে হাতে দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, গেস্নাবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদগুলো পুনর্গঠন করা হয়েছে। অবশিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে। নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা এসব অর্থের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তাদের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে শুরু হবে অডিট কার্যক্রম।
ব্যাংকগুলোর নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহায়তা নিয়ে আত্মসাৎকারীদের স্থানীয় সম্পদ অধিগ্রহণ এবং পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, সরকার শিগগিরই একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠন করবে, যারা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ব্যাংকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত চিত্র প্রকাশ করবে। ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠনের জন্য ছয় মাসের মধ্যে একটি বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রণয়ন করবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের লক্ষ্য হলো, সব আন্তর্জাতিক মানদন্ড পরিপালনে সক্ষম একটি শক্তিশালী ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা। তবে এই উদ্দেশ্য অর্জনের কার্যক্রমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়, আন্তর্জাতিক কারিগরি সহায়তা ও অর্থের প্রয়োজন হবে বলে মনে করছে সরকার।