সাফ অনূর্ধ্ব ২০ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের যুবারা। বুধবার আনফা কমপেস্নক্সে নেপালকে ৪-১ গোলে হারায় লাল-সবুজরা। এর আগেও ফাইনাল খেললেও অনূর্ধ্ব ২০ পর্যায়ে এটিই বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা, অন্যদিকে নেপালের বিপক্ষেও প্রথম জয়। তাই এই টুর্নামেন্টে নতুন ইতিহাস গড়েছে মারুফুল হকের শিষ্যরা। ম্যাচে জোড়া গোল করেন বাংলাদেশ দলের মিরাজুল ইসলাম।
এবারের আসরে গ্রম্নপপর্বে এই নেপালের বিপক্ষেই হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তাই বুধবার ফাইনাল ম্যাচে একদিকে শিরোপা জয়ের ক্ষুধা যেমন ছিল, অন্যদিকে ছিল নেপালের বিপক্ষে প্রতিশোধের ম্যাচও। ফাইনালের জয়ে মধুর প্রতিশোধও নেওয়া হলো বাংলাদেশের। শ্রীলংকাকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রম্নপপর্ব শুরুর পর নেপালের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে হেরে গ্রম্নপ রানার্সআপ হয়েছিল তারা। ২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-২০ ক্যাটাগরির আসরে ভারতের বিপক্ষে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার সেমিফাইনালে তাদের টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালের মঞ্চে উঠে আসে বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে।
বুধবার ফাইনাল ম্যাচে শুরুতে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ; কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আধিপত্য বাড়তে থাকে নেপালের। অষ্টম মিনিটে প্রথম কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতের বিপক্ষে দুটি সেভ করা গোলরক্ষক আসিফ হোসেন। বক্সের বেশ খানিকটা দূর থেকে নিরাজন ধামীর দূরপালস্নার শট অনেকটা লাফিয়ে আঙুলের টোকায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে বের করে দেন আসিফ। ষোড়শ মিনিটে সতীর্থের থ্রম্ন পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে
ধরে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন সমীর তামাং, তবে রাজীব হোসেন ছুটে গিয়ে দারুণভাবে ক্লিয়ার করেন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও শট নিতে পারেননি সমীর। ৩০তম মিনিটে নিরাজনের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ভুল পাসে নেপালের এই ফরোয়ার্ডের পায়ে বল তুলে দিয়েছিলেন এক ডিফেন্ডার। প্রথমার্ধের শেষ দিকে মিরাজুলের ওই দৃষ্টিনন্দন গোলে বদলে যায় ম্যাচের দৃশ্যপট। বক্সের একটু ওপর ফাউলের শিকার হন এই ফরোয়ার্ড, ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। মিরাজুলের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে পড়া জয়রথ শিখের গস্নাভস ফাঁকি দিয়ে পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে লুটোপুটি খায় (১-০)। এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ৫৫তম মিনিটে মিলে যায় ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোল। আসাদুল ইসলাম সাকিবের লং পাসে দূরের পোস্টে থাকা আসাদুল মোলস্নার হেড পাস থেকে হেডেই লক্ষ্যভেদ করেন মিরাজুল (২-০)। ম্যাচের ভাগ্য হেলে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। ৭০তম মিনিটের গোলে বাংলাদেশের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। বক্সের ভেতর থেকে মিরাজুলের ছোট পাস ধরে জায়গা বানিয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ করেন রাব্বী হোসেন রাহুল (৩-০)। এর ১০ মিনিট পর বক্সে আসা লং ক্রসে রাজীব লাফিয়ে হেড করলেও পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি। সমীরের হেডে ঘুরে দাঁড়ানোর উপলক্ষ্য পায় নেপাল (৩-১)। কিন্তু পরে নির্ধারিত সময় শেষে ১০ মিনিটের যোগ করা সময়ও তারা আর খুঁজে পায়নি পথ। বরং যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে রাব্বীর আড়াআড়ি পাসে নোভার শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দেওয়ার পর এক ডিফেন্ডার ক্লিয়ার করেন, কিন্তু এর আগেই বল পেরিয়ে যায় গোললাইন (৪-১)। নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়।
বাংলাদেশ একাদশ :মোহাম্মদ আসিফ, আশরাফুল হক আসিফ, শাকিল আহাদ তপু, আসাদুল ইসলাম সাকিব, রাব্বি হোসেন রাহুল, পিয়াশ আহমেদ নোভা, মিরাজুল ইসলাম, আসাদুল মোলস্না, রাজিব হোসেন, ইফতিয়ার হোসেন ও রুস্তম আসলাম দুখুমিয়া।