পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির কর্মসূচি প্রত্যাহার

প্রকাশ | ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের আহ্বানে ও বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণপদত্যাগ ও গণছুটি কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। মঙ্গলবার পলস্নী বিদু্যৎ সমিতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে সই করেন সমিতির এজিএম (ওঅ্যান্ডএম) আব্দুল হাকিম, ডিজিএম মো. আসাদুজ্জামান ভুঁইয়া এবং এজিএম (ইঅ্যান্ডসি) প্রকৌশলী রাজন কুমার দাস। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বন্যাদুর্গত মানুষের কথা বিবেচনায়, ছাত্র-জনতার গণ-অভু্যত্থানে নবগঠিত অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়, ছাত্র সমন্বয়ক এবং দেশের সুশীল সমাজের আহ্বান এবং সর্বোপরি আপামর জনসাধারণের অনুরোধের প্রেক্ষিতে পূর্বঘোষিত গণপদত্যাগ ও গণছুটি কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হলো। পলস্নী বিদু্যৎ বোর্ডের নব যোগদানকৃত চেয়ারম্যান এবং বিদু্যৎ বিভাগ দায়িত্ব নিয়ে আরইবি এবং পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির রিফর্ম কার্যক্রম ও সব চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের দাবি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করবেন এবং অনতিবিলম্বে কার্যকরী পদক্ষেপ দৃশ্যমান হবে মর্মে প্রতিশ্রম্নতি প্রদান করেছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এরই ভিত্তিতে ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়করা আন্দোলন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তে একমত হয়েছেন। এর আগে পলস্নী বিদু্যতায়ন বোর্ড ও পলস্নী বিদু্যৎ সমিতিকে একীভূত করে অভিন্ন সার্ভিস কোর্ড বাস্তবায়নসহ নানা দাবিতে গত ২৪ আগস্ট ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন ৮০টি পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেই আলটিমেটামের সময় শেষ হয় মঙ্গলবার। দেশের গ্রামাঞ্চলের ৮০ শতাংশ এলাকার ৩ কোটি ৬০ লাখের বেশি গ্রাহককে বিদু্যৎ সরবরাহ করে থাকে পলস্নী বিদু্যৎ সমিতি, যা বিদু্যৎ সরবরাহের দিক দিয়ে সর্বোচ্চ। এর আগে দাবির বিষয়ে পলস্নী বিদু্যৎ সমিতির আন্দোলনের সমন্বয়ক প্রকৌশলী রাজন কুমার দাস গণমাধ্যমকে বলেছিলে, আমরা যে দুই দফা দাবি দিয়েছি তা যুক্তিযুক্ত ও ন্যায্য। দাবি নিয়ে বেশ কয়েকবার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও কোনো সঠিক সমাধান আমরা পাইনি। গত ৮ আগস্টেও পলস্নী বিদু্যৎ, বিদু্যৎ বিভাগ এবং সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে একটি আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও তা অফিস অর্ডার আকারে প্রকাশ করা হয়নি। তাই আমরা ৭২ ঘণ্টার একটা আলটিমেটাম দিয়েছি। যদি এর মধ্যে সুষ্ঠু সমাধান না আসে তাহলে ঘোষণা অনুযায়ী আমরা গণ ছুটিতে যাব। এরই মধ্যে সমিতির ৪০ হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা (মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ৪৫ হাজারের কাছাকাছি) ছুটির আবেদন করেন। এদিকে দীর্ঘ দিন ধরেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা ও চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। চলতি বছরের মে মাসে সারাদেশে একযোগে টানা পাঁচ দিন কর্মবিরতি পালন করেন তারা। সংকট নিরসনে বিদু্যৎ বিভাগের মধ্যস্থতায় একটি সমঝোতা সভা হয় সে সময়। সভা শেষে কর্মবিরতি স্থগিত করা হয় এবং বিদু্যৎ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩৮ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সইসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে তাদের দাবি পেশ করা হয়। কিন্তু এই লিখিত দাবির বিষয়ে সন্তোষজনক ফলাফল না আসায় পুনরায় ১ জুলাই থেকে টানা ১০ দিন কর্মবিরতি পালন করা হয়। ফের সংকট নিরসনে বিদু্যৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব, তিনজন অতিরিক্ত সচিব, আরইবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে আরেকটি একটি সভা হয় এবং আরইবি-পবিস একীএকীভূতকরণ/রিফর্মের সিদ্ধান্ত তৃহীত হয়। বিদু্যৎ বিভাগ কর্তৃক আরইবি-পবিস একীভূতকরণ/রিফর্ম এখন সময়ের দাবি হিসেবে উলেস্নখ করা হয় এবং গত ১ আগস্ট আরইবি, সমিতি এবং মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই তারিখে আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকায় সমিতির দুজন জিএম এবং চারজন ডিজিএমকে শাস্তিমূলক বদলির দপ্তরাদেশ করে আরইবি। ফলে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪ আগস্ট ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় তারা।