শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

দুর্নীতির শিরোমণি দীপু মনি

নদী থেকে অবৈধভাবে ৬ হাজার কোটি টাকার বালু উত্তোলন এবং নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী
সাখাওয়াত হোসেন
  ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
দুর্নীতির শিরোমণি দীপু মনি

নোট-গাইড বইয়ের প্রকাশক ও নির্মাণ ঠিকাদারদের কাছ থেকে কমিশন আদায়, নদী থেকে অবৈধভাবে ৬ হাজার কোটি টাকার বালু উত্তোলন এবং নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এছাড়া নর্থ-সাউথ ও মানারাত ইন্টারন্যাশনালসহ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তনের নামে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বেদখল করেন দুর্নীতিগ্রস্ত-অর্থলিপ্সু এই নারী রাজনীতিক। আর এসবের মাধ্যমে তিনি রাতারাতি অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন।

দীপু মনির দুর্নীতির এই অঢেল সম্পদ প্রকাশ হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেওয়া তার হলফনামায়। এতে দেখা যায়, গত ১৫ বছরে তার সম্পদের পরিমাণ এক দুই ভাগ নয়, বেড়েছে ৪ হাজার ভাগ। যা বৈধ আয়ে অর্জন করা একেবারেই অসম্ভব। অথচ বিগত স্বৈরাচার সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত দীপু মনির বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বরং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাকে মন্ত্রিত্ব দিয়ে পুরস্কৃত করেন। ওই সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ছোটখাটো দুর্নীতির অভিযোগে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হেনস্থার রেকর্ড গড়লেও দুর্নীতির 'মহারানী' দীপু মনির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে সাহস পায়নি।

অথচ দীপু মনির বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে ২০০৯ সালে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই। তার ঘন ঘন বিদেশ সফর নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। ওই সময় তিনি সাড়ে ৪ বছরে ১৮৭টি দেশ সফর করেন এবং প্রায় ৬শ' দিন বিদেশে কাটান। যা রাষ্ট্রীয় খরচে দেশের ইতিহাসে কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ।

দীপু মনির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় দুর্নীতির অভিযোগ ছিল মেঘনা নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, দীপু মনি তার খাস লোক হিসেবে পরিচিত লক্ষ্ণীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সেলিম খানকে বালু তোলার লিজ দেন। চাঁদপুরে মেঘনা নদী থেকে সেলিম খানের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু তোলার প্রতিবাদ যারাই করেছেন তারাই দীপু মনির রোষানলে পড়েছেন। অথচ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর দুই পাড়ের অনেক গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

এ বিষয়ে জাতীয় নদী

রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেছিলেন, চাঁদপুরের একজন নারী মন্ত্রী অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। এই অভিযোগের আঙ্গুল দীপু মনির দিকেই ছিল। তিনি বলেছিলেন, এই হায়েনার দলের (অবৈধ বালু উত্তোলনকারী) পেছনে আছে একটি রাজনৈতিক শক্তি, চাঁদপুরের একজন নারী মন্ত্রী- যিনি তাদেরকে সহায়তা করেন। এই বালু সন্ত্রাসীরা ৬৬৮ কোটি সিএফটি বালু চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল। যা সরকারি সম্পত্তি। তার দাম ৬ হাজার কোটি টাকা বলে পরিবেশ অধিদপ্তর এস্টিমেট দিয়েছে।

এদিকে 'বালুখেকো' চেয়ারম্যান সেলিম খানকে সরকারি কোষাগারে ২৬৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা জমা দিতে বলেছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে অনতিবিলম্বে এই টাকা জমা দিতে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত কোনো টাকা জমা দেননি তিনি। প্রসঙ্গত, উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনার ডুবোচর থেকে ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বালু তোলার বিপরীতে (র?য়্যালটি আদায়) ওই টাকা দিতে বলা হয়।

সরকারি তদন্তে দেখা গেছে, দীপু মনির সমর্থন ছাড়া সেলিম খান তার বালুর ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারতেন না। তিনি সেলিম খানের জন্য অন্তত তিনবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করেছেন। এছাড়া ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে দীপু মনির বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অন্তত ১৫টি ডিও লেটার পাঠিয়েছেন, যার মাধ্যমে তিনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষে বালু উত্তোলনের অনুমতি আদায়ের চেষ্টা করেছেন। সরকারি নথিপত্রেই যার প্রমাণ মিলেছে।

অন্যদিকে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে দীপু মনির বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার পর এক মাস না পেরোতেই কমিশনের ওই চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রায় দেড় বছর বাকি থাকতেই বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার। নদী খেকোদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ায় তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ওই সময় একাধিক জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

তবে দীপু মনির এসব দুর্নীতি তুচ্ছ হয়ে দেখা দেয় চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ দুর্নীতি ফাঁস হওয়ার পর। জানা যায়, এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য শুধু জমি অধিগ্রহণে ৩৫৯ কোটি টাকা দুর্নীতির পাঁয়তারা করেন দীপু মনি। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের আগেই সেখানকার সাড়ে ৬২ একর জমি মৌজা দরের চেয়ে ২০ গুণ বেশি দাম দেখিয়ে দলিল করে নেন তার নিকটাত্মীয় ও ঘনিষ্ঠজনরা। তারা ভূমি অধিগ্রহণে প্রশাসনিক অনুমোদনের আগেই চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্ণীপুর ইউনিয়নে জায়গা ঠিক করে নিজেদের নামে দলিল করিয়ে নেন। পরবর্তী সময়ে সেসব জমিই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচন করে এবং জেলা প্রশাসনকে অধিগ্রহণের জন্য বলে। সেখান থেকে ৩৫৯ কোটি অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

এ অধিগ্রহণের বিরোধিতা করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস। তিনি চাঁদপুরে দীপু মনির ভাইসহ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীর জমি দখলের বিরুদ্ধে অবস্থানের জন্য আলোচিত ছিলেন। টিপুসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ভুয়া দলিলের মাধ্যমে ৪৮ একরের বেশি জমির দখল নেওয়ার প্রতিবাদ জানানোর ৪৮ ঘণ্টা পর তাকে নেত্রকোনায় বদলি করা হয়।

শিক্ষার উন্নয়ন বাজেটের বেশিরভাগ বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল সদ্য ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের বিতর্কিত সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ভাই জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপুর হাতে। তিনি এই দপ্তরের বড় কর্তা সেজে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজের জন্য ২৫ শতাংশ কমিশন নিতেন। তাকে কমিশন না দিয়ে কোনো ঠিকাদার কাজই পেতেন না। সম্প্রতি সাবেক বিতর্কিত এই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য গণমাধ্যমের উঠে এসেছে। স্থানীয় অসংখ্য মানুষ মুখ খুলেছে দীপু ও টিপুর চাঁদাবাজি নিয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, নোট-গাইড বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও বছরের শুরু থেকেই সারা দেশে এসব বই দেদার বিক্রি হয়ে আসছে। মুখে নোট-গাইডের বিরোধিতা করলেও দীপু মনি নোট-গাইড বিক্রেতাদের কাছ থেকে নিয়মিত কমিশন নিতেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করতেন এক প্রকাশনীর মালিক। সেই প্রকাশনীর মালিকের বাড়িও চাঁদপুরে। ঢাকার এক নোট-গাইড প্রকাশক জানান, ৩ মাস পরপর অন্তত ২৫ কোটি টাকা কমিশন নিতেন দীপু মনি। তারা এ সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ দুদকের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এদিকে শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে ২০২২ সালে শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ-সাউথ ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড পরিবর্তনের নামে আসলে এগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেয় একটি চক্র। এর নেপথ্যে ছিলেন দীপু মনি। আওয়ামী লীগের মেয়র, ব্যবসায়ী, আমলা, শিক্ষাবিদদের দিয়ে নতুন করে গঠন করা হয় নর্থ-সাউথ ও মানারাতের ট্রাস্টি বোর্ড। এরপর বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও এভাবে বেদখল হয়। বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি বেদখলের উদ্যোগ নিয়েও শেষ করতে পারেননি দীপু মনি। ২০২৪ সালে নির্বাচনের পর তাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর এই দুই বিশ্ববিদ্যালয় বেদখলের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। যদিও তা শেষ করতে পারেননি তিনি। এ ছাড়া দীপু মনি ও তার ভাই টিপুর হাত থেকে রক্ষা পায়নি রাজধানী ও চাঁদপুরের ছোট-বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

অভিযোগ রয়েছে, মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ- সব কিছুতে হাত ছিল তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) নিয়োগের জন্য দুই কোটি এবং কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য তিনি ৫০ লাখ টাকা ঘুষ নিতেন। তার সময়ে শিক্ষা খাতে এটি ছিল 'ওপেন সিক্রেট'। এসব দুর্নীতি-অনিয়ম সম্পর্কে জানলেও ভয়ে এতদিন মুখ খোলেননি তার মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।

দীপু মনি ক্ষমতায় থাকাকালে দায়িত্বে থাকা দুইজন সচিব জানান, দীপু মনির ভাই ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ টিপুর মাধ্যমে হতো সব নিয়োগ ও পদায়ন। বিভিন্ন কাজে বিতর্কের জন্ম দেওয়ায় একপর্যায়ে তার দপ্তর থেকে অন্যত্র চলে যান তৎকালীন এক সচিব। এছাড়া, নিজ থেকে চলে যান দীপু মনির একান্ত সচিবও (পিএস)।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের চার মেয়াদের মধ্যে তিন মেয়াদে ভিন্ন তিনটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন দীপু মনি। এর মধ্যে পররাষ্ট্র ও শিক্ষায় পূর্ণকালীন মেয়াদ শেষ করেন। সর্বশেষ সরকারে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে পালন করেন। তিন মন্ত্রণালয়ে থাকা অবস্থায় তিনি ও তার ভাই টিপু নানা বিতর্কের জন্ম দেন। রাজধানী কলাবাগান ও বনানীতে ছায়া অফিসের মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন তারা। ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীপু মনি নিজে ও তার স্বজনরা জড়িয়ে পড়েন দুর্নীতিতে।

এছাড়া, শিক্ষা প্রশাসনে প্রতিটি বদলিতে তার ভাইয়ের হাতে ছিল পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। সর্বনিম্ন দুই লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকায় বেচাবিক্রি হতো শিক্ষা প্রশাসনের নানা পদ।

১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা ও রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত একটি কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল বলেন, তাকে এই কলেজের অধ্যক্ষ পদে আসতে ৫৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। প্রথমে একজন মন্ত্রীর ডিও লেটার নিয়ে গেলে শিক্ষামন্ত্রী দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। এরপর তিনি শুনতে পারেন অন্য আরেকজন তার ভাই টিপুর সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বিষয়টি মন্ত্রীকে জানাতে একাধিকবার সাক্ষাৎ চেয়েও পাননি। পরে তার ভাইয়ের কাছে গেলে তিনি ডিও লেটার দিয়ে প্রিন্সিপাল হতে পারবেন কিনা প্রশ্ন করেন। এরপর অন্য আরেকটি মাধ্যমে ৫৫ লাখ টাকায় দফারফা করে তিনি প্রিন্সিপাল হন।

চট্টগ্রাম বিভাগের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে পদায়ন করতে দুই কোটি টাকা নেন তার ভাই টিপু। নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সুপারিশ আসার পর টিপু অন্য একজনের মাধ্যমে জানান, ভিসি হওয়ার জন্য ২ কোটি টাকা দিতে রাজি আছেন কয়েকজন। তদবির করে লাভ নেই। আপনার অধীনে একটি নিয়োগ দিয়েই তো এই টাকা ওঠানো সম্ভব- এমন পরামর্শ দিলে শেষ পর্যন্ত ওই ভিসি টাকা দিতে রাজি হন।

ইউজিসির সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশের ইতিহাসে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের কোনো নজির ছিল না। কিন্তু দীপু মনি সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, দীপু মনির সঙ্গে কাজ করা তৎকালীন একজন সচিব তার অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানান। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অন্যত্র চলে যান। তিনি এখন প্রশাসনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে আসীন রয়েছেন। এছাড়া, দীপু মনির সঙ্গ ছাড়েন তার তৎকালীন পিএসও।

এছাড়া শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি) ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাবপত্র সরবরাহ এবং মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি-সুবিধা সরবরাহের কাজেও সব ঠিকাদারকে ৫ শতাংশ কমিশন দিয়ে কাজ নিতে হতো। ইইডি'র পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল দীপু মনির ভাই টিপুর হাতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে