নরসিংদীর রায়পুরায় বাজার দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব

রাতভর টেঁটা ও বন্দুক যুদ্ধে পাঁচজন নিহত

প্রকাশ | ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

রায়পুরা (নরসিংদী) সংবাদদাতা
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের শ্রীনগর ইউনিয়নে বাজার দখল নিয়ে দ্বন্দ্বে রাতভর টেঁটা ও বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। এতে দু'পক্ষের অন্তত ৫ জন নিহত ও অর্ধশত গুরুতর আহত হয়েছেন। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এ ঘটনা চলে। নিহতেরা হলেন- উপজেলার সায়দাবাদ গ্রামের সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী ফিরোজা বেগম (৩৫), শাহীন মিয়ার ছেলে জুনাইদ (১৬), ইসমাইল ব্যাপারীর ছেলে আমির হোসেন (৭০) ও তার ছোট ভাই বাদল মিয়া (৪৫) এবং আব্বাস আলীর ছেলে আনিস (৩০)। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদ গ্রামের আইলস্নার বাড়ির হানিফ মাস্টার ও ফিরোজ মেম্বারের দলের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। স্থানীয় সায়দাবাদ বাজার দখল নিয়ে তাদের মধ্যে এ বিরোধ। সায়দাবাদ বাজারটি আগে হানিফ মাস্টার সমর্থকদের দখলে ছিল, কিন্তু গত প্রায় ৩ বছর ধরে ফিরোজ মেম্বারের সমর্থকদের দখলে থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারা বাজারে উঠতে পারছেন না। এ সুযোগে হানিফ মাস্টারের লোকজন বাজার দখলের চেষ্টা করেন। গত ১০-১২ দিনে তাদের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ বুধবার রাতে দু'পক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। রাতভর চলে তুমুল টেঁটা ও বন্দুক যুদ্ধ, যা গড়ায় বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত। এ ঘটনায় পাঁচজন নিহত এবং উভয়পক্ষের অর্ধশত মানুষ আহত হয়। আহতের অধিকাংশ ও নিহতরা সবাই ফিরোজ মেম্বারের সমর্থক বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন- শাহ আলমের ছেলে ইমরান (২৩), সুলতান মিয়ার ছেলে শহিদ মিয়া (৭০), বনি মিয়ার ছেলে এরশাদ মিয়া (৪০), মৃত দারু মিয়ার ছেলে জসিম মিয়া, মৃত ইউনূছ মিয়ার ছেলে আমির হোসেন (৫০), সম্ভু মিয়ার ছেলে আব্বাস আলী (৫০), বাচ্চু মিয়ার ছেলে জয় (১৯), আয়নুল মিয়ার ছেলে শাহারাজ (২২), বজলু ফকিরের ছেলে তাজুল ইসলাম (৩৮), মালেক মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়া (১৯), জামাল মিয়ার ছেলে ইদন মিয়া (২৩), মৃত সব্দর আলীর ছেলে মনসুর আলী (৫০), মজিদ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৬০), আবির মিয়ার ছেলে সৌরভ আলী (৩৫), ফরিদ মিয়ার ছেলে আয়মান (২০), মহন মিয়ার ছেলে তোফাজ্জল (২৫), মাইন উদ্দিনের ছেলে সায়মান (১৪), শাহ আলমের ছেলে মাসুদ (২৩), আসাদের ছেলে সানজিদ (১৮), গিয়াস উদ্দিনের ছেলে তানভির (২০), আতাবর হোসেনের ছেলে সোহান মিয়া (২০), জাবিন মিয়ার মেয়ে তানজিনা (১৯), মানিক মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (২১), আসমত আলীর ছেলে আলী আকবর (৩৮)। এ ছাড়াও আরও অনেকে আহত হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. খান নুরউদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'চারজনের মরদেহ রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে আছে।' রায়পুরা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আব্দুল হালিম বলেন, 'এটা আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব। এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃতু্যর খবর পেয়েছি। আহত হয়েছে অনেকেই। ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।' রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাফায়েত হোসেন পলাশ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, 'সংঘর্ষের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ২টা পর্যন্ত চারজনের মরদেহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। একজনের লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালে রয়েছে। রায়পুরা থানার পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছে।'